মানবতাবিরোধী অপরাধ শিগগির শুরু হবে পলাতক সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ওসমান ফারুকের বিচার

0
10

প্রতিদিনের ডেস্ক
একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত ধর্ষণ, নির্যাতন, হত্যা-গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন চারদলীয় জোট সরকার আমলের প্রভাবশালী বিএনপি নেতা ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ড. এম ওসমান ফারুক। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে কঠোর গোপনীয়তার মধ্যদিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন শাখায় প্রতিবেদন দাখিল করেছে তদন্ত সংস্থা।
এখন নিয়ম অনুযায়ী ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ আমলে নিলে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে আত্মগোপনে থাকা ওসমান ফারুকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির জন্য আবেদন করা হতে পারে। তবে, তিনি গ্রেফতার না হলেও তার অনুপস্থিতিতেই শুরু হবে বিচারকাজ। বিচারে রাষ্ট্রীয় খরচে তার পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ করা হবে বলে প্রসিকিউশন থেকে জানানো হয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) মো. মতিউর রহমান।
জানা গেছে, তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অনুসন্ধান শুরুর সাত বছর পর তদন্ত শেষে সংস্থার পক্ষ থেকে কয়েকটি পৃথক অভিযোগের ভিত্তিতে গত বছরের ৩ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন শাখায় এ প্রতিবেদন দাখিল করেন আইও মো. মতিউর রহমান। যেহেতু আসামি আগে থেকেই আত্মগোপনে, সেহেতু নিয়ম অনুযায়ী প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে ওসমান ফারুককে গ্রেফতার করতে (ওয়ারেন্ট) পরোয়ানা জারির আবেদন করা হবে। তার পরে বিচার শুরুর জন্য রাষ্ট্রীয় খরচে আইনজীবী নিয়োগ করা হবে।
ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা গেছে, তার মামলার বিষয়ে আইনজীবী ও তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ে করা হবে ফিল্ড ভিজিট। অপরাধ স্কুটিনি (তন্ন তন্ন করে পরীক্ষা) করার পরই পরোয়ানা জারি ও ফরমার চার্জ দাখিলের প্রক্রিয়া শুরু। এখন ওসমান ফারুকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন প্রক্রিয়াধীন এবং পরোয়ার পরই শুরু হবে বিচারকাজ, তখনই নিয়োগ করা হবে আইনজীবী।’
ড. ওসমান ফারুকের বিচারের বিষয়ে জানতে চাইলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দায়িত্বরত চিফ প্রসিকিউটর সিনিয়র অ্যাডভোকেট সৈয়দ হায়দার আলী বলেন, বিএনপি নেতা ড. ওসমান ফারুক যেহেতু বরাবরই পলাতক, কাজেই তার অনুপস্থিতিতেই বিচারকাজ শুরু হবে। পলাতক আসামিকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য পত্রিকার মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ের বিষয়ে জানানো হয়। তার ক্ষেত্রেও একই প্রক্রিয়া নেওয়া হবে। ‘পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে যদি ড. ওসমান ফারুক উপস্থিত না হলে, পরের বিষয়গুলো আদালত দেখবেন। তখন ট্রাইব্যুনাল সন্তুষ্ট হলে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করবেন। তার পক্ষে রাষ্ট্রীয় খরচে আইনজীবী নিয়োগ হবে। এরপর নিয়ম অনুযায়ী সাক্ষ্যগ্রহণ, জেরা ও যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) শেষে রায় ঘোষণা করা হবে।
সৈয়দ হায়দার আলী বলেন, এখন আমাদের একজন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সিমনকে মামলার দায়িত্ব দেওয়া আছে। তিনি মামলার বিষয়ে কাজ করছেন। তাকে সহযোগিতার জন্য রয়েছেন আরও কয়েকজন প্রসিকিউটর। সবাই তাকে সহযোগিতা করবো। আমরা অন্য মামলার মতো ড. ওসমান ফারুকের মামলাটি নিয়ে প্রসিকিউশন টিম বসেছিলাম। প্রস্তুত রাষ্ট্রপক্ষ, বাকি প্রক্রিয়া শেষ হলেই বিচারকাজ শুরু হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওসমান ফারুকের মামলার দায়িত্বরত প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সিমন বলেন, ‘বিএনপি নেতা ড. ওসমান ফারুকের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন সংস্থার পক্ষ থেকে আমাদের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। তদন্ত সংস্থা সব ডকুমেন্ট সাবমিট করার পর আমরা আলোচনায় বসেছিলাম। তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের পর যদি মনে করি ফর্মাল চার্জ সাবমিট করার মতো করবো।
সুলতান মাহমুদ সিমন বলেন, অভিযোগ (ফর্মাল চার্জ) দাখিলের পর আদালত সন্তুষ্ট হয়ে (কগনিজেনস) আমলে নেন। এসময়ের মধ্যে ওসমান ফারুক গ্রেফতার না হলে তার বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করবেন আদালত। এরপর গ্রেফতার না হলে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। এর পরও যদি আসামি ওসমান ফারুক নিজেকে ধরা না দেন তখন স্টেট ডিফেন্স (রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী) নিয়োগ করা হবে। স্টেট ডিফেন্স নিয়োগের পর প্রাথমিক প্রক্রিয়া শেষ হবে। এর পরই ড. ওসমান ফারুকের বিচারকাজ শুরু হবে।
তিনি বলেন, ওসমান ফারুকের বিষয়ে নথিপত্র ও সাক্ষ্য উপস্থাপন করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করবো। এরপর পরোয়ানা জারি হলে এ মামলার পরবর্তী কার্যক্রম শুরু হবে। পলাতক আসামির বিষয়ে যে প্রক্রিয়া ওসমান ফারুকের বিচারও একই প্রক্রিয়ায় শুরু হবে।ড. ওসমান ফারুকের মামলার বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক এম সানাউল হক বলেন, ‘ড. ওসমান ফারুকের মামলার বিষয়ে চার্জ গঠনের আগে আমরা কিছু বলতে পারবো না। কিন্তু ওসমান ফারুকের বিষয়ে অপরাধের প্রমাণ পেয়েছি। মানবতাবিরোধী অপরাধ করার প্রাথমিক তথ্য-প্রমাণ হাতে রয়েছে। সে জন্য রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তথা প্রসিকিউশনে তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন পাঠিয়েছি। যখন প্রসিকিউটর চার্জ ফ্রেম (অভিযোগ দাখিল) করবেন বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে। উনি (ড. ওসমান ফারুক) যেহেতু পলাতক এ বিষয়ে প্রসিকিউশন আবেদন করার পর আদালতই ব্যবস্থা নেবেন। আমাদের কাছে এখন আর কিছু থাকছে না, সব বিষয়ে আদালত ব্যবস্থা নেবেন।’
ওসমান ফারুকের অপরাধের বিষয়ে এম সানাউল হক বলেন, তার অপরাধের (এরিয়া) এলাকা ছিল মূলত ময়মনসিংহ শহরের আশপাশ, ব্রহ্মপুত্র নদের তীর অর্থাৎ গাঙ্গিনারপাড় ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। এ মামলায় একমাত্র আসামি তিনি।
সিলেট সীমান্ত দিয়ে ভারত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যান ওসমান ফারুক
তদন্ত সংস্থার সূত্রমতে, মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের তদন্ত শুরু হলে অত্যন্ত গোপনে দেশ ত্যাগ করেন ওসমান ফারুক। ২০১৬ সালের মে মাসে সিলেট সীমান্ত দিয়ে ভারত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান তিনি। এর আগে একই বছরের ৪ মে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার এক সংবাদ সম্মেলনে ড. ওসমান ফারুকের বিরুদ্ধে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের তদন্ত শুরু করার কথা জানানো হয়।
ওই সময় সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১৯৭১ সালে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এমন ১১ জনের একটি তালিকা নিয়ে কাজ করছেন তারা। তাদের অধিকাংশই ওই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বা কর্মকর্তা ছিলেন। ওসমান ফারুক বিশ্ববিদ্যালয়ের তখনকার এগ্রিকালচার ইকোনমি অনুষদের রিডার ছিলেন।
কিন্তু অন্য আসামির ক্ষেত্রে প্রতিবেদন দাখিলের আগে সংবাদ সম্মেলন ডেকে তা গণমাধ্যমকে জানানো হয়। তবে বরাবরের মতো সংবাদ সম্মেলন নয়, বরং ড. ওসমান ফারুকের বিষয়ে গত ৩ নভেম্বর অনেকটা গোপনীয়তা অবলম্বন করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। এমনকি এ বিষয়ে জানতে চাইলেও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশনের কোনো কর্মকর্তা।
আইও মো. মতিউর রহমান বলেন, কিশোরগঞ্জ ও ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশপাশের এলাকায় অনুসন্ধান শেষে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে অভিযোগগুলো গত বছরের ৩ অক্টোবর চিফ প্রসিকিউটর বরাবর দাখিল করেছি। সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতারি পরোয়ানার বিষয়টি জানানো হয়েছে। এখন নিয়মানুযায়ী অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে তা আমলে নিলে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে ওসমান ফারুকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির জন্য আবেদন করা হতে পারে। তিনি গ্রেফতার না হলেও তার অনুপস্থিতিতেই শুরু হবে বিচারকাজ। বিচারে রাষ্ট্রীয় খরচে তার পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ করা হবে।
ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের দায়িত্বে থাকা সিনিয়র অ্যাডভোকেট সৈয়দ হায়দার আলী বলেন, ‘আমরা প্রতিবেদন পেয়েছি। এ বিষয়ে একজন প্রসিকিউটরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি আদালতে গ্রেফতারের জন্য ওয়ারেন্ট (পরোয়ানা) চাইবেন।’
যেভাবে তদন্ত শুরু
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কেঁচো খুঁড়তেই বের হলো সাপ। ২০১৫ সালের অক্টোবরে ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ হান্নানের (তিনি ২০২১ সালের ১৫ জুন মারা গেছেন) বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ তদন্ত করতে গিয়ে ওসমান ফারুকসহ ১১ জনের সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া যায়। এরই ধারাবাহিকতায় ওসমান ফারুকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়।
স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে দেশের একটি গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে ড. এম ওসমান ফারুক, তার এক ভগ্নিপতিসহ ১১ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে। সেই রিপোর্টের সূত্র ধরে তদন্তে নামে তদন্ত সংস্থা।
ওসমান ফারুকের বাড়ি কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার হাইধনখালী গ্রামে। তিনি করিমগঞ্জ-তাড়াইল নির্বাচনী এলাকার বিএনপি দলীয় প্রভাবশালী সাবেক সংসদ সদস্য।
মামলায় ৪০ জনের বেশি প্রত্যক্ষদর্শীর তথ্য
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ড. ওসমান ফারুকের বিরুদ্ধে মামলায় আনুষ্ঠানিক তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে ময়মনসিংহের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ওসমান ফারুকের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ৪ জানুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করা হয়েছে। তার অপরাধ বিষয়ে জানার জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে সাবেক ধর্মমন্ত্রী মরহুম প্রিন্সিপাল মো. মতিউর রহমান, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন রেজিস্ট্রার, ডেপুটি রেজিস্ট্রার ও বর্তমান প্রো-ভিসিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রত্যক্ষদর্শীসহ ৪০ থেকে ৪৫ জনকে। জিজ্ঞাসাবাদ এবং দালিলিক প্রমাণ মিলিয়ে পাওয়া তথ্য-উপাত্ত থেকে ওসমান ফারুকের অপরাধের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। তবে, মামলার স্বার্থে সাক্ষীদের নাম প্রকাশ করা যাবে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ট্রেন থেকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা নেমে আসার সময় তাদের আমন্ত্রণ জানিয়ে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের জন্য নির্মিত হলে থাকার জন্য বলা হয়। তখন হানাদার বাহিনী সেখানে একটি ক্যাম্প স্থাপন এবং হলের কয়েকটি কক্ষে বসবাস শুরু করে।
মানবতাবিরোধী অপরাধ তদন্তে গঠিত ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় নিজের সরকারি বাসভবনে পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তাদের নিয়ে আড্ডা দিতেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ড. এম ওসমান ফারুক। পাক সেনাদের দাওয়াত করে খাওয়াতেন নিজের বাসায়।
গোপনে দলীয় পরামর্শে দেশত্যাগ
জানা গেছে, মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তদন্ত শুরুর পর গোপনে দেশ ছাড়েন ওসমান ফারুক। ২০১৬ সালের মে মাসে সিলেট সীমান্ত দিয়ে ভারত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান তিনি। বিমানবন্দর দিয়ে দেশ ছাড়তে গেলে গ্রেফতার হওয়ার আশঙ্কা থেকেই সীমান্তপথ বেছে নেন ওসমান ফারুক।
একটি সূত্র জানা গেছে, বিশ্বব্যাংকের সাবেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ড. ওসমান ফারুক সেসময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে যোগাযোগ রক্ষা করতেন। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার এড়াতে বিএনপির হাইকমান্ডের পরামর্শেই ওই সময় দেশ ছাড়েন তিনি।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলের শিক্ষামন্ত্রী ড. এম ওসমান ফারুকের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের মে মাসে প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। পরের বছরের ২০১৭ সালের ৪ জানুয়ারি থেকে শুরু হয় তদন্ত শেষ করেন গত বছরের অক্টোবর মাসে।
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ড. এম ওসমান ফারুক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন উপাচার্য ওসমান গণির ছেলে। বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর বেশির ভাগই ময়মনসিংহ শহরের আশপাশ ও গাঙ্গিনারপাড়সহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক। যদিও তার পৈতৃক ও গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলায়। সে সময়ে ময়মনসিংহ রেলস্টেশন থেকে হানাদার বাহিনীদের রিসিভ করে খাওয়াতেন তার বাসায়। পরে তাদের ক্যাম্প করেন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে।