৬ দেশে শ্রমবাজারে সম্ভাবনা

0
15

জর্ডান, মরিশাস, মাল্টা, ব্রুনেই ও কুয়েতে বাংলাদেশের শ্রমবাজার খোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কাতারে দক্ষ কর্মী পাঠাতে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে। ফলে শ্রম বাজারে খরা কিছুটা হলেও কাটতে পারে। এটা খুবই ইতিবাচক সংবাদ। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে তৈরি পোশাক রপ্তানি আয়ের পরেই রয়েছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রেরিত অর্থের পরিমাণ। কাজেই সরকার বিদেশে দক্ষ কর্মী পাঠানোর ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে বলে মনে করছি। বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রবাহের সবচেয়ে বড় উৎস প্রবাসী শ্রমিকদের পাঠানো অর্থ। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারি করোনায় শ্রমবাজারে বিপর্যয় নেমে এসেছিল। তবে দীর্ঘ স্থবিরতা কাটিয়ে বিভিন্ন দেশের শ্রমবাজারে শ্রমিকদের চাহিদা বেড়েছে। নতুন শ্রমবাজার তৈরিতে সরকারকে দৃষ্টি দিতে হবে। ইউরোপ-আমেরিকায় বাংলাদেশের শ্রমবাজার নিয়ে সুখবর নেই। মধ্যপ্রাচ্যের বাজারে মন্দাভাব চলছে। এর মধ্যে ৬টি দেশে শ্রমবাজার নতুন করে চালু হলে প্রশিক্ষিত কর্মীরা কাজ করার সুযোগ পাবেন, বাড়বে রেমিট্যান্স। বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারগুলোর একটি মালয়েশিয়া। এটি দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে। ২০০৬ ও ২০০৭ সালের পর ভুয়া কোম্পানি দেখিয়ে, ভুয়া পারমিট দেখিয়ে প্রয়োজনের অতিরিক্ত লোক এনে এবং সাগর ও আকাশপথে অবৈধভাবে লোক এনে মালয়েশিয়ায় অমানবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হলে দীর্ঘদিন সেই দেশ বাংলাদেশ থেকে কর্মী আনা বন্ধ রেখেছিল। মালয়েশিয়া সরকার নতুন একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে- তারা ৩১ মের মধ্যে আগের কোটা অনুসারে বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশ থেকে কর্মী নেবে। এরপর আগের ব্যবস্থা তারা পর্যালোচনা করে পরবর্তী সময় কর্মসূচির জন্য কাজ করবে। মালয়েশিয়ার বাজার দ্রুত খোলা জরুরি। সরকার ২০২৬ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে। আর এর জন্য প্রয়োজন উচ্চ প্রবৃদ্ধি ও অধিক কর্মসংস্থান। বাংলাদেশ এখন ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের সুযোগ ভোগ করছে। দেশের অধিকাংশ মানুষ তরুণ। এদের শ্রমকে যথাযথভাবে কাজে লাগানোর ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম ক্ষেত্র হলো রেমিট্যান্স। জনশক্তি রপ্তানি এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করছে। বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির সবচেয়ে বড় বাজার সৌদি আরব ও মালয়েশিয়া। সৌদি আরব, মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজার যাতে প্রসারিত হয় এ লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। প্রবাসী আয় বাড়ানোর ক্ষেত্রে ভালো ভূমিকা রাখতে পারে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। এ দুটি দেশে ভালো আয়ের সুযোগ বেশি। এর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় চাহিদা বাড়ছে প্রতি বছর। ইউরোপের অনেক দেশে দক্ষ কর্মীর চাহিদা মেটাতে পারলে প্রবাসী আয় বাড়বে। ২০১৮ সাল থেকে আফ্রিকার দেশ সোমালিয়া, সুদান, উগান্ডা এবং জাম্বিয়া বাংলাদেশকে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রস্তাব দিয়ে আসছে। সেসব প্রস্তাব অনুযায়ী বাংলাদেশের শিল্পোদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারীরা দেশগুলোতে সহজ শর্তে কৃষি, কৃষিভিত্তিক শিল্পপণ্য, কৃষিজ খাদ্যশিল্প এবং তৈরি পোশাক খাতে বিনিয়োগে মনোযোগ দিতে পারে। এসব দেশে আমাদের বড় কর্মসংস্থানের বাজার তৈরির সুযোগ হতে পারে। এজন্য জোরালো কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।