বিড়ালের খাবারের প্যাকেটে আইস রাখতেন সংগীতশিল্পী এনামুল কবির

0
12

প্রতিদিনের ডেস্ক
কোটি টাকার ক্রিস্টাল মেথসহ (আইস) গ্রেফতার সংগীতশিল্পী এনামুল কবির ওরফে রেবেল বিড়ালের খাবারের প্যাকেটে রাখতেন মাদক। তিনি পলিথিনে মাদক ঢুকিয়ে স্কচটেপ দিয়ে পেঁচিয়ে বিড়ালের খাবার প্যাকেটে রাখতেন। গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে উদ্ধার করা মাদকের আনুমানিক বাজারমূল্য কোটি টাকা। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এমন তথ্য দিয়েছেন বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
গত শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে রামপুরা থানার মালিবাগ চৌধুরীপাড়া মাটির মসজিদ এলাকা থেকে রেবেলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই সময় তার কাছ থেকে এক কেজি ক্রিস্টাল মেথ জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় ওই দিনই রামপুরা থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করে পুলিশ।
পরে একই দিন বিকেলে তাকে আদালতে হাজির করে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা রামপুরা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জহুরুল ইসলাম। শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাকিল আহম্মেদ তার দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
দুদিনের রিমান্ড শেষে গত সোমবার (২৯ এপ্রিল) তাকে ফের আদালতে হাজির করে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে রাখার আবেদন করা হয়। অপরদিকে, তার আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাকিল আহম্মেদ তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে আসামি পক্ষের আইনজীবী এরশাদ আলী তুহিন বলেন, এনামুল কবির রেবেল সম্পূর্ণ নির্দোষ। তাকে সামাজিকভাবে হেয় ও হয়রানির উদ্দেশ্যে মামলায় জড়ানো হয়েছে। রেবেল মাদক কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত নয়, কখনো ছিলও না। তার বিরুদ্ধে আগে কোনো মাদকের মামলা নেই।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জহুরুল ইসলাম বলেন, এনামুল কবির রেবেলকে গ্রেফতারের পর আদালতের নির্দেশ দুদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। রিমান্ডে তিনি গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও দিয়েছেন। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার সময় পলাতক মারজান-উল ইসলাম অমিতকে গ্রেফতার করা হয়। মামলাটি গুরুত্বসহকারে তদন্ত চলছে।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত ২৭ এপ্রিল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার মাটির মসজিদ এলাকায় সোনালী ব্যাংকের সামনে পাকা রাস্তার ওপর কয়েকজন ব্যক্তি মাদক বেচাকেনার জন্য অবস্থান করছেন- এমন তথ্যের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আসামিরা পালানোর চেষ্টাকালে মো. এনামুল কবির রেবেলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আরও দুজন পালিয়ে যায়।
পরে এনামুল কবির রেবেলকে তল্লাশি করে লাল রঙের একটি শপিংব্যাগের ভেতর থেকে কোটি টাকার ক্রিস্টাল মেথ উদ্ধার করা হয়। শপিংব্যাগের ভেতরে রাখা পলিথিনে মাদক ঢুকিয়ে স্কচটেপ দিয়ে পেঁচিয়ে বিড়ালের খাবার প্যাকেটে রাখা ছিল। আসামি রেবেল ও ঘটনাস্থল থেকে পলাতকরা পরস্পর যোগসাজশে রামপুরা এলাকাসহ ঢাকার বিভিন্ন থানা এলাকায় মাদক বিক্রি করে আসছিল মর্মে স্বীকার করেন।
আসামি এনামুল কবির রেবেল বিক্রির উদ্দেশ্যে নিজ দখলে আইস রাখেন। পলাতক আসামি লিটন লিটু ভাইজান ও মারজান-উল ইসলাম অমিত রেবেলকে মাদক ব্যবসার কাজে সহায়তায় করায় ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬(১) এর ১০(গ)/৪১ ধারায় অপরাধ করেছেন। এ ঘটনায় ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬(১) এর ১০(গ)/৪১ ধারায় একটি মামলা করা হয়েছে।