মুজিবুল হক চুন্নুকে একহাত নিলেন ব্যারিস্টার সুমন

0
16

প্রতিদিনের ডেস্ক
সংসদ সদস্যরা বেতন ও সরকারি বরাদ্দ কত পান তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করায় মঙ্গলবার (৭ মে) জাতীয় সংসদের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের বিরুদ্ধে স্পিকারের কাছে নালিশ দেন বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু।
পরদিনই তার কঠোর সমালোচনা করে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেছেন, চুন্নু স্বৈরাচারের দোসর। তার মুখে সমালোচনা মানায় না। তিনি বলেন, এমপিরা কত বরাদ্দ পান তা জনগণের জানার অধিকার আছে। আমি সেটা প্রকাশ করেছি। এতে চুন্নু সাহেবের সমস্যা কোথায়?বুধবার (৮ মে) জাতীয় সংসদে মুজিবুল হক চুন্নুর বক্তব্যের জবাবে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ব্যারিস্টার সুমন।
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, জাতীয় সংসদে চুন্নুর অবস্থান পরিষ্কার নয়। তিনি দাবি করেন বিরোধী দল, কিন্তু থাকেন সরকারি দলের ভেতরে। এখন এসেছেন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের মুখ বন্ধ করতে।এসময় সুমন স্পষ্ট জানিয়ে দেন, সংসদ সদস্য হিসেবে বরাদ্দ পাওয়ার বিষয় তিনি ফেসবুকে প্রকাশ করে যাবেন।
এর আগে গতকাল সংসদে সংসদ সদস্য সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে (ইঙ্গিত করে বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু জাতীয় সংসদে বলেছেন, আমাদের একজন সংসদ সদস্য। নামটা বলতে চাই না। তিনি নতুন নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ফেসবুকে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে আমরা সবাই ভুক্তভোগী।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে মুজিবুল হক এ কথা বলেন।
চুন্নু বলেন, তিনি (সুমন) বলেছেন যে, এমপিরা কত টাকা বেতন পান? তারা তো বলে না, গোপন করে। তিনি (সুমন) বলেছেন, এক লাখ ৭২ হাজার টাকা বেতন (মাসিক) পেয়েছেন। আমরা কত টাকা বেতন পাই তা লুকানোর কিছু নেই, ওয়েবসাইটে গেলে পাওয়া যাবে।চুন্নু আরও বলেন, তিন মাসের মধ্যে ২৮ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। সেটা কীভাবে পেলেন? তিন কোটি টাকা গমের জন্য, আর বাকি ২৫ কোটি টাকা পেয়েছেন রাস্তার জন্য।স্পিকারকে উদ্দেশ্য করে চুন্নু বলেন, এই ২৮ কোটি টাকা কি আমি পেয়েছি, আপনি (স্পিকার) পেয়েছেন? প্রধানমন্ত্রী পেয়েছেন? এরই মধ্যে ফেসবুকে দেখে আমাকে অনেকেই বলছেন ২৮ কোটি টাকা পেয়েছেন, এই টাকা কই? তিনি বলেছেন ২৫ কোটি টাকা পেয়েছেন, কিন্তু আমরাতো পাইনি।
স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে পাঁচ বছরে ২০ কোটি টাকা এমপিদের বরাদ্দ দেওয়ার কথা উল্লেখ করে চুন্নু বলেন, এবার বলেছেন পাঁচ বছরের জন্য ২৫ কোটি টাকার প্রকল্পের নাম দেওয়ার জন্য। আগামী ৫ বছরের জন্য কয়টা প্রকল্প করব, তার নাম দিয়েছি আমরা। টাকার সঙ্গে তো আমার কোনো সম্পর্ক নেই। স্থানীয় সরকার বিভাগ জরিপ করে টেন্ডার করে, তারপরে বাস্তবায়ন করে। কিন্তু সংসদ সদস্য বলছেন, আমরা ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। শুধু তাই না তিনি আরও বলেছেন, এমপি হলে যদি এত লাভ হয়, তাহলে আরও আগে এমপি হতাম।
স্পিকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনি এই সংসদের অভিভাবক। আমাদের কোনো সদস্য যদি এমন কোনো কথা বলেন, যে কথায় প্রধানমন্ত্রী, স্পিকারসহ ৩৪৯ জন এমপি (সায়েদুল হক সুমন ছাড়া) সম্পর্কে ভুল বার্তা যাবে।
তার (সুমনের) সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জন কবার জন্য যদি এ ধরনের কথায় ভুল বার্তা যায়, বিষয়টি আপনি দেখতে পারেন। আমরা এখানে অনেক কথা বলব, বিতর্ক করব। এমন কথা বলবার অধিকার নেই যাতে ৩৪৯ এমপির ইজ্জত যাবে। তাদের সম্পর্কে মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে। তাই অভিভাবক হিসেবে ওই সংসদ সদস্যকে ডেকে তাকে কী করবেন, ব্যবস্থা নেবেন বলে স্পিকারের কাছে প্রশ্ন রাখেন মুজিবুল হক চুন্নু।