১২ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ২৬শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

আজ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী

সুন্দর সাহা
“ও মন রমজানের এই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ” কাকতালীয় ভাবে আজ এই ঈদের দিনেই কালজয়ী এই গানের স্রষ্টা বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজি নজরুল ইসলামের জন্মদিন। যার শক্তিশালী লেখা আর ছন্দে আজও উদ্বেলিত গোটা জাতি। আজ শনিবার (১১ জ্যৈষ্ঠ) বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অন্যতম প্রাণপুরুষ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫ তম জন্মদিন। সৃষ্টিশীল অনন্য প্রতিভার নাম, কাজী নজরুল ইসলাম। একাধারে কবি, সাহিত্যিক, গীতিকার, নাট্যকার। চলচ্চিত্র অভিনেতা। শিল্পকলার নানান শাখায় ছিল তাঁর অবাধ বিচরণ। জাতীয় পর্যায়ে কবির জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। বাংলা ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ ভারতের বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুরিয়া থানার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মেছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম। তাঁর ডাক নাম ‘দুখু মিয়া’। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মা জাহেদা খাতুন। জাতীয়ভাবে এবার জন্মবার্ষিকীর আয়োজন করা হয়েছে কবির স্মৃতিধন্য ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশালের দরিরামপুরে। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে কবির জন্মবার্ষিকী উদযাপিত হবে। বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত হলেও কাজী নজরুল ছিলেন একাধারে কবি, সঙ্গীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা। তিনি বৈচিত্র্যময় অসংখ্য রাগ-রাগিনী সৃষ্টি করে বাংলা সঙ্গীত জগতকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। তার কবিতা, গান ও সাহিত্য কর্ম বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণ সৃষ্টি করেছিল। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ লেখক। তাঁর লেখনি জাতীয় জীবনে অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। তাঁর কবিতা ও গান মানুষকে যুগে যুগে শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে চলছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তাঁর গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস।বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর পরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে সপরিবারে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বাংলাদেশে তাঁর বসবাসের ব্যবস্থা করেন। ধানমন্ডিতে কবির জন্য একটি বাড়ি প্রদান করেন। শৈশব-কৈশোর-তারুণ্যে, জীবনে পরতে পরতে তার, সংগ্রাম। জড়িয়েছিলেন নানা পেশায়। ১৯২২ সালে প্রকাশ করেন ধূমকেতু পত্রিকা। “আনন্দময়ীর আগমনে” কবিতার জন্য নজরুলকে দেয়া হয় সশ্রম কারাদন্ড। সাহিত্য রচনার পাশাপাশি সংগীত ও চলচ্চিত্রে, পরিচালনা করেন। করেন অভিনয়ও। ১৯৪২ সালে বাকশক্তি হারান নজরুল। মাত্র ২২ বছরের লেখক জীবনে লেখেন প্রায় ৩ হাজার গান, অসংখ্য কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস। ১৯৭২ সালে কবি নজরুলকে সপরিবারে নিয়ে আসা হয় স্বাধীন বাংলাদেশে। ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট তৎকালীন পিজি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন কবি। তার ইচ্ছানুসারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে তাকে সমাধিস্থ করা হয়।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়