১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

একাকিত্ব কাটাতে কী করবেন?

প্রতিদিনের ডেস্ক:
একাকিত্ব মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মৃত্যুহারের দিক দিয়ে এর প্রভাব ধূমপানের মতোই ক্ষতিকারক, এমনটিই জানিয়েছে মার্কিন সার্জন জেনারেলের একটি সাম্প্রতিক প্রতিবেদন।একাকিত্ব ও নিঃসঙ্গতা মানুষের বেঁচে থাকার আনন্দ কেড়ে নেয়। একাকী মানুষরা স্বভাবতই তার আশপাশে কাউকে পান না বলে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। আর মানসিক অস্থিরতার কারণে তারা আত্মঘাতী হয়ে ওঠেন। কর্মব্যস্ত এই জীবনে মানুষের মধ্যে এখন একাকিত্ব অনেকটাই বেড়ে গেছে।বিশ্বব্যাপী করা এক সমীক্ষা অনুসারে, বিশ্বে প্রায় ৩৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক একাকিত্বের সঙ্গে বসবাস করছেন। যার মধ্যে দেশের দিক দিয়ে ব্রাজিল এগিয়ে আছে। ব্রাজিলের ৫০ শতাংশ উত্তরদাতা সমীক্ষায় জানান যে, তারা প্রায়ই কিংবা সব সময় একাকী বোধ করেন।অন্যদিকে তুরস্ক , ভারত ও সৌদি আরবে ৪৩-৪৬ শতাংশ উত্তরদাতারা জানান তারাও প্রায়ই একাকিত্ব অনুভব করেন। বেশিরভাগ মানুষই একাকিত্বের কাছে হেরে যান। তাই নিজেকে ভালো রাখতে নিজেই এগিয়ে আসুন। একাকিত্ব কাটিয়ে উঠতে কী কী করবেন, চলুন জেনে নেওয়া যাক-নিজেকে সবার সামনে মেলে ধরুন একাকী ব্যক্তিরা সব সময় নিজের সঙ্গে সময় কাটাতেই ভালোবাসেন। পরিবার কিংবা প্রিয়জনের কাছ থেকে আলাদা বা বিচ্ছিন্ন থাকায় তারা মনের কষ্টে অন্যদেরকে এড়িয়ে চলেন। এমনটি করবেন না। নিজেকে সবার সামনে মেলে ধরুন। লুকিয়ে থাকবেন না ঘরের কোণে।সেচ্ছাসেবক হতে পারে সময় কাটানোর জন্য ও অন্যের ভালো করতে চাইলে একজন সেচ্ছাসেবক হিসেবে নিজেকে বিভিন্ন মানবিক কাজের সঙ্গে যুক্ত করুন। দেখবেন নিঃসঙ্গতা পালিয়ে যাবে। সমাজ, মানুষ ও অবহেলিতদের জন্য কিছু করুন। দেখবেন মনে শান্তি পাবেন ও ভালো থাকবেন।যে কোনো শখ বাস্তবায়ন করুন বয়স্ক ব্যক্তিরাই একাকিত্বে বেশি ভোগেন। বয়সের কাছে হার মেনে যাওয়ার কারণেই তারা নিঃসঙ্গ বোধ করেন। এ সময় চাইলে পুরোনো কোনো শখ বাস্তবায়ন করতে পারেন। বয়স কোনো বিষয় নয়, তাই হেরে না গিয়ে নিজের যা ভালো লাগে তা ই করুন।সোশ্যাল মিডিয়া কম ব্যবহার করুন বর্তমানে ছোট-বড় সবাই ডিজিটাল টেকনোলজিতে আসক্ত। যা অনেকের জীবনেই খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। ধরুন, একজন ব্যক্তি তার পরিবার নিয়ে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন। যে ব্যক্তি তার পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন বা একাই বাস করেন, তিনি ওই ছবি দেখলে তো কষ্ট হওয়া স্বাভাবিক। তাই ডিজিটাল টেকনোলজি কম ব্যবহার করুন।পোষ্যের যত্ন নিন কারো যত্ন নেওয়া একাকিত্বের অনুভূতি কমাতে পারে। চাইলে ঘরে একটি পোষ্য রাখুন। দেখবেন পোষ্যের যত্ন নিতে নিতে সময় কেটে যাবে আপনার।
লক্ষ্য নির্ধারণ করুন একটি অর্থপূর্ণ জীবনের জন্য উদ্দেশ্য ঠিক করা জরুরি। আপনার লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। যখনই ভাববেন, জীবনের সব কিছু শেষ হয়ে গেছে, ঠিক তখনই নতুনভাবে জীবন গড়ার বিষয়ে ভাবুন।বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন খুবই নিঃসঙ্গতা বোধ করলে পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। চাইলে নতুন বন্ধুও খুঁজে নিতে পারেন। মনোবিদের কাউন্সিলিং নিনআপনার একাকিত্ব যদি আত্মহননের পথে নিয়ে যায়, তাহলে দ্রুত থেরাপিস্টের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। মনোবিদের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে দেখবেন আপনি আবারও বেঁচে থাকার আনন্দ ফিরে পাবেন।আজ থেকে শুরু হয়েছে একাকিত্ব সচেতনতা সপ্তাহ। একাকিত্বের ক্রমবর্ধমান হার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে ২০১৭ সালে যুক্তরাজ্যে শুরু হয় একাকিত্ব সচেতনতা সপ্তাহ উদযাপন।এছাড়া এই সমস্যা যে শুধু ব্যক্তি ক্ষেত্রে নয়, বরং সামগ্রিকভাবে সমাজের উপরও প্রভাব ফেলছে তা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতেই মারমালেড ট্রাস্টের প্রচেষ্টার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল একাকিত্ব সচেতনতা সপ্তাহ। যদিও এই সচেতনতা সপ্তাহ যুক্তরাজ্যে শুরু হয়েছিল, তবে বর্তমানে এটি বিশ্বজুড়ে পালিত হয়।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়