সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আবারো শুরু হয়েছে পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল আলোচনা চলছে এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে। সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা পুনর্বহাল করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের প্রতিবাদ এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র বহালের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বৃষ্টিতে ভিজেই তারা অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। গতকাল শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হন। পরে মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার দা সূর্যসেন হল, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল, উপাচার্যের বাসভবন, রাজু ভাস্কর্য ঘুরে শাহবাগে এসে সড়ক অবরোধ করেন তারা। এছাড়া সড়ক অবরোধ করেন চবি ও ইবির শিক্ষার্থীরা। এদিকে একই দিন হাইকোর্টের দেয়া রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি মুলতবি হয়েছিল। ফলে ২০১৮ সালের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় স্থগিত করা হয়নি। তবে রায়ের অনুলিপি পাওয়ার পর রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলা হয়েছে। এদিকে শিক্ষার্থীরা চাচ্ছেন, ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের যে পরিপত্র জারি করা হয়েছিল, তা বহাল রাখা হোক। পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠনপূর্বক দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরির সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেয়া (সুবিধাবঞ্চিত ও প্রতিবন্ধী ব্যতীত) হোক। তাদের আরো দাবি, সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্যপদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে। দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। ২০১৮ সালে আন্দোলনের শুরু থেকেই কোটা সংস্কারের দাবিতে যে আন্দোলন হয়েছিল, তা নিয়ে অনেকের মনেই ভ্রান্ত ধারণা ছিল। প্রথমেই মনে রাখা দরকার এই আন্দোলন কোটাপ্রথা পুরোপুরি বন্ধের জন্য ছিল না, এটি মূলত যে অযৌক্তিক কোটা ব্যবস্থা বাংলাদেশে প্রচলিত আছে, তা সংস্কারের জন্য ছিল। একটি স্বাধীন দেশের জনগণ হিসেবে সবার সমঅধিকার পাওয়ার কথা, কিন্তু বর্তমানে কোটা ব্যবস্থা দেখলে জনগণের অধিকারের সমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অতি নগণ্য সংখ্যক মানুষ কয়েকগুণ বেশি সুবিধা পাচ্ছে চাকরির ক্ষেত্রে। বিশেষ নিয়োগ তো সাধারণদের পুরোপুরি বঞ্চিত করে করা হয়ে থাকে। বিসিএসের পাশাপাশি দেশের প্রতিটি ব্যাংকেও এ ধরনের নিয়োগ হয়ে থাকে। দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য যোগ্য এবং মেধাবী কর্মকর্তাদের প্রয়োজন। তাই সরকারের উচিত কোটা নিয়ে তড়িঘড়ি কোনো সিদ্ধান্তে না গিয়ে সার্বিক বিবেচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেয়া, যা সবার জন্য সমতা ও দেশের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং যৌক্তিকতা প্রসঙ্গ
Previous article
Next article
আরো দেখুন
আসলে বাজার নিয়ন্ত্রণ কার হাতে
কোনোভাবেই নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে এখন বাজার। অসাধু ব্যবসায়ীদের খপ্পরে পড়ে সাধারণ মানুষ অসহায়। পেঁয়াজের দামের ঊর্ধ্বগতির খবর আসছে...
আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা জরুরি
দেশে উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে বাতিল ইলেকট্রনিকস যন্ত্র থেকে সৃষ্ট বর্জ্য বা ই-বর্জ্যরে পরিমাণ। এ থেকে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি ও পরিবেশ দূষণ। গতকাল ভোরের কাগজে প্রকাশিত...