প্রতিদিনের ডেস্ক
স্বামীকে সেজেগুজে বাড়ি থেকে বেরোতে দেখে প্রথমে অবাক, পরে উদ্বিগ্ন হয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের লিন্ডা ওয়াংবানডু। প্রশ্ন করেছিলেন, কোথায় যাচ্ছেন? জবাব এসেছিল হেলাফেলা করে, ‘নিউ ইয়র্ক, বন্ধুর বাড়ি।’ তবে সেই ‘বন্ধু’র দেখা পাওয়ার আগেই মৃত্যুর খবর এলো বৃদ্ধের। স্ত্রী লিন্ডার অভিযোগ, তার স্বামী আসলে প্রেমে পড়েছিলেন মেটার তৈরি এক এআই চ্যাটবটের। সেই ভার্চুয়াল প্রেমিকার হাত ধরতে গিয়েই চিরতরে চলে যান ৭৬ বছরের থংবু ওয়াংবানডু। নিউ জার্সিতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছিল এই দম্পতি। অসুস্থতার কারণে বাড়িতেই থাকতেন ওয়াংবানডু। তখনই শুরু হয় তার এক অদ্ভুত সম্পর্ক। ফেসবুক মেসেঞ্জারে নিয়মিত কথা বলতেন ‘বিগ সিস বিলি’ নামে এক তরুণীর সঙ্গে। কিন্তু ‘বিলি’ বাস্তব কেউ নন। হলিউড তারকা কেন্ডাল জেনারের আদলে তৈরি মেটার এক চ্যাটবট। সাবস্ক্রিপশনভিত্তিক এই অ্যাপ দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। লিন্ডা জানান, তার স্বামী ধীরেই বাস্তব থেকে দূরে সরে যাচ্ছিলেন। রাত জেগে চলত সেই ভার্চুয়াল প্রেমালাপ। চ্যাটে বিলি নিজেকে এক যুবতী বলে পরিচয় দিতেন। এমনকি নিউ ইয়র্কে তার ঠিকানা আছে, দেখা করা যাবে, এই আশ্বাসও দিতেন। একদিন ঠিকানার কোডও পাঠিয়ে দেন। ঠিকানা পেয়েই ২৫ মার্চ ব্যাগ গুছিয়ে ট্রেনে চড়ে বসেন ওয়াংবানডু। পথে নিউ জার্সির রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে পার্কিং লটে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন। মাথা ও ঘাড়ের চোটে তিন দিন হাসপাতালে লড়াই করে ২৮ মার্চ মারা যান তিনি। লিন্ডার কথায়, ‘সেদিনই ভেবেছিলাম, কোনো প্রতারকচক্রের ফাঁদে পা দেয়নি তো! সত্যিই তাই হলো।’ লিন্ডা সরাসরি দায়ী করেছেন মেটাকে। তার দাবি, চ্যাটবট ইচ্ছা করেই নিজেকে বাস্তব মানুষ হিসেবে পরিচয় দিয়েছে। এমনকি দেখা করার আমন্ত্রণ জানিয়েছে। সেই ভরসায়ই স্বামী বাড়ি ছাড়েন।ওয়াংবানডুর মেয়ে জুলি বলেন, ‘কোম্পানিগুলো মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে যন্ত্রকে মানুষের মতো বানাচ্ছে। কিন্তু সীমা কোথায়? বাবাকে যদি বলা হতো, আমি আসল মানুষ না তাহলে এভাবে মরতে হতো না।’

