নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরের সাহসী সাংবাদিক আরএম সাইফুল আলম মুকুল হত্যার ২৭ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো চিহ্নিত হয়নি হত্যাকারীরা, শেষ হয়নি বিচারকাজও। হাইকোর্টে মামলাটি আটকে আছে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে। ১৯৯৮ সালের ৩০ আগস্ট রাতে দৈনিক রানার সম্পাদক মুকুল শহর থেকে বাসায় ফেরার পথে চারখাম্বার মোড়ে দুর্বৃত্তদের বোমা হামলায় নিহত হন। পরদিন তার স্ত্রী হাফিজা আক্তার শিরিন বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। আইনের জটিলতা আর দীর্ঘসূত্রিতায় আলোচিত এ মামলার বিচারকাজ এগোয়নি এক বিন্দুও। স্ত্রী হাফিজা আক্তার শিরিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ভেবেছিলাম হত্যাকাণ্ডের বিচার দেখে যেতে পারব। এত সময় গেল, কোনো কিছুই হলো না। এখন বয়স বেড়েছে, শরীরেও নানা রোগ। আর্থিক সচ্ছলতাও নেই। বিশ্বাস করি, সৃষ্টিকর্তাই বিচার করবেন।
মামলার তদন্তে প্রথম চার্জশিটে সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামসহ ২২ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। তবে আইনি জটিলতার কারণে এক পর্যায়ে মামলাটি বাতিল হয়ে যায়। ২০০৫ সালে হাইকোর্ট মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করে বর্ধিত তদন্তের নির্দেশ দেয়। ২০০৬ সালে যশোরের আদালতে চার্জ গঠন হয় এবং ২৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণও শেষ হয়। কিন্তু ২০১০ সালে আসামি সাংবাদিক ফারাজী আজমল হোসেন হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করলে মামলাটি স্থগিত হয়ে পড়ে। তখন থেকেই কার্যক্রম অচল অবস্থায় রয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, বাদীপক্ষ যদি উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ করিয়ে আনতে পারেন, তাহলে মামলাটি পুনরুজ্জীবিত হবে। শনিবার (৩০ আগস্ট) শহীদ সাংবাদিক মুকুলের ২৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রেস ক্লাব যশোর, সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন কর্মসূচি পালন করে। প্রেস ক্লাব যশোরের কর্মসূচির মধ্যে ছিল কালো ব্যাজ ধারণ, শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন ও ক্লাব মিলনায়তনে দোয়া মাহফিল। সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরও একইভাবে স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে।

