১৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ  । ২রা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

সাতক্ষীরায় একদিনে পানিতে ডুবে ৫ শিশু-কিশোরের মৃত্যু

আব্দুল আলিম/সুকুমার দাশ বাচ্চু/ উৎপল মণ্ডল, সাতক্ষীরা
সাতক্ষীরার পাঁচটি উপজেলায় পৃথক ঘটনায় পানিতে ডুবে চার শিশু ও এক কিশোরের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) আশাশুনি, কলারোয়া, শ্যামনগর, সাতক্ষীরা সদর ও কালিগঞ্জে এসব দুর্ঘটনা ঘটে। এতে এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। আশাশুনি উপজেলার বড়দল ইউনিয়নের বামনডাঙ্গা গ্রামে ১৩ মাস বয়সী শিশু ঈশিতা সানা পানিতে পড়ে মারা যায়। সে মহেন্দ্র নাথ সানার ছোট মেয়ে। পরিবার সদস্য ও পুলিশ জানায়, মা শিশুটির হাত ধরে ছিলেন। এ সময় হঠাৎ কুকুর তাড়াতে গিয়ে মায়ের হাত ফসকে শিশুটি পুকুরে পড়ে যায়। মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই পানিতে ডুবে তার মৃত্যু হয়। আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুল আরেফিন বলেন, ‘১৩ মাস বয়সী একটি শিশু তার মায়ের হাত থেকে পানিতে পড়ে মারা গেছে। শিশুটির মা কুকুর তাড়াতে গিয়ে হাত ছেড়ে দিয়েছিল। মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যেই পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে তার।’ কলারোয়া উপজেলার কেড়াগাছি গ্রামে দুই বছরের শিশু ইরফান খাঁ পানিতে ডুবে মারা যায়। সে ইকরাম খাঁর ছেলে। দুপুরে গোসল করানোর জন্য বাইরে রাখা হলে কিছুক্ষণ পর তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে রান্নাঘরের পাশের ডোবা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। শ্যামনগরের চন্ডিপুর গ্রামে মানসিক প্রতিবন্ধী কিশোর ফয়সাল হোসেন (১৬) পানিতে ডুবে মারা যায়। সে স্থানীয় মোটরসাইকেলচালক শাহিনুরের ছেলে। রবিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় এক চায়ের দোকান থেকে নিখোঁজ হওয়ার পর সোমবার দুপুরে বাড়ির পাশের ডোবায় তার মরদেহ পাওয়া যায়। শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্যা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘পরিবারের কোনও আপত্তি না থাকায় মরদেহ দাফনের জন্য হস্তান্তর করা হয়েছে।’ এ ছাড়া সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ফিংড়ী ইউনিয়নের এল্লারচর আবাসন প্রকল্পে ইসমাইল হোসেনের শিশুকন্যা পানিতে ডুবে মারা গেছে। সোমবার বিকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছেন সদর থানার ওসি শামিনুল হক। অন্যদিকে কালিগঞ্জ উপজেলার নলতার ইন্দ্রনগর গ্রামে মো. সিরাজুল ইসলামের ১৯ মাস বয়সী মেয়ে লামিসা খাতুন পানিতে ডুবে মারা যায়। দুপুরে তাকে না পেয়ে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে বাড়ির উঠানের পাশের পুকুর থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় ক্লিনিকে নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বাদ মাগরিব জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। এ বিষয়ে কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে আমাদের জানানো হয়নি। তবে আমরা খোঁজ নিচ্ছি।’ একদিনে এভাবে একাধিক শিশু ও কিশোরের মৃত্যুতে স্থানীয়রা শোকাহত হয়ে পড়েছেন। সচেতন মহল বলছে, শিশুদের নিরাপত্তায় পরিবার ও অভিভাবকদের আরও সতর্ক ও দায়িত্বশীল হতে হবে।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়