উৎপল মণ্ডল, শ্যামনগর
প্রায় সাত বছর আগে কাজের সন্ধানে মালেশিয়াতে পাড়ি জমায় বনজীবি পিতার ছোট ছেলে আছাদুল ইসালাম। কয়েক বছরের উপার্জনের অর্থে সবে মাত্র ধার-দেনা আর ঋণের বোঝা পরিশোধ করেছেন। পারিবারিক স্বচ্ছলতা ফিরতে শুরু করায় বৃদ্ধ পিতা-মাতা আর ভাই-বোনদের মধ্যেও জেগেছিল আশার আলো। তবে সোনার হরিণের খোঁজে বিদেশে পাড়ি জমানো আছাদুলকে বাড়িতে ফিেেরত হয়েছে মৃতবেশে। মুহুর্তের অসতর্কতায় প্রাণ হারানো আছাদুলের মৃতদেহ দেশে ফিরেছে শনিবার ভেররাতে। এদিকে সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে কঠিন দুঃসময়ের মধ্যে পড়েছে পরিবারটি। জানা যায়, আছাদুল মালেমিয়ার কুয়ালালামপুরের একটি কোম্পানীতে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিল। স্থানীয়(মালেশিয়া) সময় ১৭ জুলাই বুধবার রাত আটটার দিকে কোম্পানীর জাহাজের অক্সিজেন শুন্য কেবিনে ঢুকলে মৃত্যু হয় তার। আছাদুল ইসলাম (২৫) সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার নাপিতখালী গ্রামের আরশাদ আলীর তিন সন্তানের মধ্যে কনিষ্ঠ। নিহতের চাচাত ভাই আজিজুল ইসলাম আপন জানান সহকর্মী ১২ জনের সাথে মিলে কয়লা নামানোর কাজ করছিল আছাদুল।একপর্যায়ে অক্সিজেন সংকট থাকায় একটি কেবিনে যাওয়ার জন্য উপস্থিত ১২জন শ্রমিককে নির্দেশনা দেয় কতৃপক্ষ।কিন্তু ভুলবশত আছাদুল একাকী উক্ত কেবিনে ঢুকে পড়লে অক্সিজেন সংকটে তার মৃত্যু হয়।পরক্ষনে সহকর্মীরা কতৃপক্ষের সহায়তা নিয়ে মৃত অবস্থায় আছাদুলকে উদ্ধার করে। আছাদুলের পিতা আরশাদ আলী জানায় শেষ সম্বল জমি বিক্রিসহ মহাজনের থেকে চড়াসুদে ঋণ নিয়ে ছেলেকে বিদেশে পাঠিয়েছিলেন। দুই বছর আগে সব ঋণ দেনা শোধ করার পর ছেলে বাড়িতে ফিরতে চেয়েছিল। তবে কোন পুঁজি তৈরী করতে না পারায় আরও কিছুদিন কাজ করে দেশে ফেরার পরামর্শ দেয়া হয় তাকে।নির্ভরশীল ছেলের মৃত্যুতে নিজেরা পথে বসেছেন বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। গাবুরা ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম জানান শনিবার সকালে জানাযা শেষে আছাদুলকে বাড়ির পাশের একটি কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। তরুন আছাদুলের মৃত্যুতে বৃদ্ধ পিতা-মাতাসহ পরিবারটি চরম অসহায়ত্বেও মধ্যে পড়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।

