৩১শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ১৫ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

ধর্ষণের শিকার নারীকে হাসপাতাল থেকে ফিল্মিস্টাইলে অপহরণ

খুলনা প্রতিনিধি
ধর্ষণের শিকার এক নারীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের (ওসিসি) সামনে থেকে অপহরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার বিকালে ওই নারীর স্বজন ও গণমাধ্যম কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে ফিল্মিস্টাইলে তাকে মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় অপহরণকারীরা যমুনা টিভি ও এসএ টিভির ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। মাইক্রোবাস যাওয়ার পর ঘটনাস্থল থেকে ডুমুরিয়া উপজেলার রুদাঘরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গাজী তৌহিদু্জ্জামানকে আটকে রাখে স্থানীয়রা। পরে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। আটক গাজী তৌহিদ ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদের চাচাতো ভাই। এর আগে শনিবার রাতে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেন ওই নারী। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে অনেক দিন ধরে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ তার। শনিবার রাত সোয়া ১১টায় ওই নারী নিজেই খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি হন। রোববার বিকাল সাড়ে ৫টায় ওসিসি থেকে তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এর আগেই সেখানে উপস্থিত হন গণমাধ্যমকর্মী ও আইনজীবীরা। ঘটনাস্থলে উপস্থিত বাংলাদেশ মানবাধিকবার বাস্তবায়ন সংস্থার সমন্বয়কারী আইনজীবী মোমিনুল ইসলাম বলেন, ওই নারীকে আইনী সহায়তা দিতে তাদের ৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল রোববার বিকালে হাসপাতালের ওসিসিতে যান। সেখানে অপরিচিত এক ব্যক্তি ওই নারীর ছাড়পত্র নিচ্ছিলেন। তার পরিচয় জানতে চাইলে ওসিসির দায়িত্বরত ব্যক্তিরা সবাইকে বাইরে বের করে দেন। বাইরে বের হওয়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ১৫/২০ জন ব্যক্তি জোর করে ওই নারী ও তার মাকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান। তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির সময় দুই সাংবাদিক আহত হন। তিনি বলেন, ধর্ষণের শিকার নারীর নিরাপদ আশ্রয়স্থল ওসিসি। সেখান থেকে ভিকটিমকে যেভাবে অপহরণ করা হলো তাতে আমরা আতংকিত। পুরোটা সময় ওসিসির নিরাপত্তায় থাকা পুলিশ সদস্যরা নীরব ছিলেন। হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ। তবে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (সোনাডাঙ্গা) আবু নাসের মো. আল আমিন বলেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে, ওই নারী তার মায়ের সঙ্গে গেছেন। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। গাজী তৌহিদ আমাদের হেফাজতে রয়েছে।’ শনিবার ওই তরুণী গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে অভিযোগ করেন, শনিবার রাতে চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত অফিসে তাকে ধর্ষণ করা হয়। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অনেকদিন ধরে তাকে ধর্ষণ করেন চেয়ারম্যান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত রাত থেকেই ওসিসিসহ হাসপাতালের প্রবেশদ্বারে অপরিচিত ব্যক্তিদের আনাগোনা বেড়ে যায়। সকাল থেকে ওসিসির সামনে অবস্থান নেন ৮/১০ জন ব্যক্তি। বিকালে অপহরণের সঙ্গে তারাই যুক্ত ছিলেন।এদিকে ধর্ষণ ও অপহরণের বিষয়ে ডুমুরিয়া থানার ওসি সুকান্ত সাহা বলেন, এখনও পর্যন্ত কেউ থানায় এ ধরনের কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমদ বলেন, এ ধরনের কিছু আমার জানা নেই।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়