স্থায়ী রূপ পাচ্ছে দ্রুত বিচার আইন

0
44

প্রতিদিনের ডেস্ক
বহুল আলোচিত দ্রুত বিচার আইনের মেয়াদ ধাপে ধাপে না বাড়িয়ে এটিকে স্থায়ী রূপ দেওয়া হচ্ছে।সোমবার (২৯ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভা বৈঠকে ‘আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) (সংশোধন) আইন, ২০২৪’ এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ বৈঠক হয়।
সভা শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন ব্রিফিংয়ে বলেন, দ্রুত বিচার আইন করার পর এর মেয়াদ ছিল ২ বছর। পরে কয়েক ধাপে আইনটির মেয়াদ বাড়ানো হয়। ২০২৪ সালের ৯ এপ্রিল এর মেয়াদ শেষ হবে। মন্ত্রিসভা বৈঠকে ধাপে ধাপে মেয়াদ বাড়ানোর পরিবর্তে স্থায়ী আইন হিসেবে করতে নীতিগত সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে। এটির আর নতুন করে মেয়াদ বাড়াতে হবে না।
মাহবুব হোসেন বলেন, জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, আইনটির অনেক সুফল আছে। এ আইনটির কারণে এই ক্ষেত্রে তাদের তরফ থেকে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য খুব কাজে লেগেছে। এজন্য তারা আইনটি কন্টিনিউট করতে চাচ্ছেন।
রাজনৈতিকভাবে বিরোধীদের ওপর এই আইনের বেশি প্রয়োগ হচ্ছে কি না, এ প্রশ্নে মাহবুব বলেন, মন্ত্রিসভা বৈঠকে ওই লাইনে আলোচনা হয়নি, আজ পুরোপুরি আইনশৃঙ্খলা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য, অপরাধীকে শাস্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে আইনটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পেরেছে বলে জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে উপস্থাপন করা হয়েছে, মন্ত্রিসভা সেটিকে গ্রহণ করেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে জানা গেছে, ২০০২ সালে দ্রুত বিচার আইনটি প্রথম কার্যকর করা হয়। তখন বলা হয়েছিল ২ বছর পর্যন্ত এটি বলবৎ থাকবে। পরে বিভিন্ন সময় কার্যকারিতার মেয়াদ বাড়ানো হয়। ২০০৪, ২০০৬, ২০১২ সালে এ আইনের কার্যকারিতার মেয়াদ বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ২০১৯ সালে মেয়াদ ৫ বছর বাড়ানো হয়েছিল। সে মেয়াদ আগামী ৯ এপ্রিল শেষ হবে।
চাঁদাবাজি, যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা, যানবাহনের ক্ষতি সাধন করা, স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিনষ্ট করা, ছিনতাই, দস্যুতা, ত্রাস ও অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি, দরপত্র ক্রয়-বিক্রয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, ভয়-ভীতি প্রদর্শনসহ গুরুতর অপরাধ দ্রুততার সঙ্গে বিচারের জন্য আইনটি করা হয়েছে
এছাড়া মন্ত্রিসভা বৈঠকে ‌জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি আইন, ২০২৪ এর নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিসভায় এ আইনের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। তখন সেটা সংসদে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সময় স্বল্পতার কারণে পাস করা যায়নি। কাজেই ফের এটি সংসদে নেওয়ার জন্য আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকে তোলা হয়েছিল। সংসদে নেওয়ার জন্য মন্ত্রিসভা আজ চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, মন্ত্রিসভায় আজ চারটি এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রুলস অব বিজনেস অনুসারে, বছরে চারবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে আগের তিন মাসের মন্ত্রিসভা বৈঠকের বাস্তবায়ন ও অগ্রগতি জানাতে হয়। প্রথম এজেন্ডা ছিল মন্ত্রিসভা বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলোর বাস্তবায়নের অগ্রগতি অবহিতকরণ। আমরা সেটা অবহিত করেছি।একাদশ সংসদে পাস হাওয়ার জন্য মন্ত্রিসভার অনুমোদন নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পাস করা হয়নি, এমন ছয়টি আইনকে মন্ত্রিসভায় নতুন করে অনুমোদন নিতে হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মন্ত্রিসভার বৈঠকে আজকে যে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে, সেটি হচ্ছে গত বছরের শেষের প্রান্তিকে অনেকগুলো বিল মন্ত্রিসভা থেকে চূড়ান্তভাবে অনুমোদনের পর সংসদে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গত সংসদের অধিবেশন শেষ হয়ে যাওয়ায় সময় স্বল্পতার কারণে ছয়টি বিল পাস করা হয়নি। সেগুলো নতুন করে দ্বাদশ সংসদে পাশ করানোর জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে এসব বিল সংসদে তোলার জন্য নতুন মন্ত্রিসভায় আবার অনুমোদন নিতে হবে।
এর আগে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়ার পর সংসদে তোলা সম্ভব হয়নি কিংবা আইনে পরিণত করা যায়, এমন বিল সম্পর্কে একই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান মাহবুব হোসেন।