‘‘বার্ধক্যজনিত কারনে বাঘটির মৃত্যু হতে পারে’’ সুন্দরবনের খাল থেকে বাঘের মৃতদেহ উদ্ধার

0
16

কামরুজ্জামান মুকুল, বাগেরহাট
সুন্দরবনের খাল থেকে ভাসমান অবস্থায় একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মরদেহ উদ্ধার করেছেন বনরক্ষীরা। সোমবার রাতে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের কচিখালী এলাকার একটি খাল থেকে ভাসমান অবস্থায় বাঘটির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে বাঘটির ময়নাতদন্ত হয়েছে। এনিয়ে গত ২৩ বছরে সুন্দরবনে নানাভাবে ৪১টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে।
খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো জানান, ‘বাঘটির মৃত্যুর কারণ জানতে মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারী) প্রানি সম্পদ বিভাগের সাথে সমন্বয় করে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। এছাড়া বাঘটি কিভাবে মারা গেল, বাঘের বয়সসহ অন্যান্য বিষয়গুলো বনবিভাগ অনুসন্ধান করছে।’ বাগেরহাট জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. ছাহেব আলী জানান, মোড়েলগঞ্জ ও শরণখোলা উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা সুন্দরবনের কচিখালী স্টেশনে গিয়ে মৃতবাঘটির ময়নাতদন্ত করেছে। সংগ্রহণ করা বাঘের বিভিন্ন নমুনা পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হচ্ছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর বাঘের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম জানান, খাল থেকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করার পর বাঘটির ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর বাঘের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে, তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বার্ধক্যজনিত কারনে বাঘটির মৃত্যু হতে পারে। বন বিভাগের সূত্র মতে, গত ২০২২ সালের ২৮ জানুয়ারি সুন্দরবনের দুবলার চরের কাছে রুপার খাল থেকে মৃত অবস্থায় একটি বাঘ উদ্ধার করে বন বিভাগ। ২০২১ সালের মার্চে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের ভোলা নদীর ধনচেবাড়িয়ার চর থেকে মৃত অবস্থায় একটি বাঘ উদ্ধার করা হয়। ২০২০ সালের জুলাই মাসে মাত্র সাড়ে ৫ মাসের ব্যবধানে সুন্দরবন পূর্ব ও পশ্চিম বিভাগ এলাকা থেকে দুটি মৃত বাঘ উদ্ধার হয়। ২০০১ সাল থেকে ২০২৪ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গত ২৩ বছরে সুন্দরবনে নানাভাবে ৪১টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগে ২৫টি এবং পশ্চিম বিভাগে ১৬টি বাঘের মৃত্যু হয়। কখনো চোরা শিকারির হাতে আবার সুন্দরবন থেকে লোকালয়ে প্রবেশ করায় গণপিটুনির শিকার হয়ে বাঘ মারা পড়েছে। তা ছাড়া ঝড়-জলোচ্ছাস, অসুস্থতা, বার্ধক্যজনিত কারণে অনেক বাঘ মারা গেছে। এ সময়ে প্রায় ২০টি বাঘের চামড়া উদ্ধার করা হয়েছে। সর্বশেষ ২০১৮ সালের সর্বশেষ জরিপ অনুসারে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে বাঘের সংখ্যা ১১৪টি। বর্তমানে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা জানতে ক্যামেরা ক্যামেরা ট্র্যাপিং পদ্ধতির মাধ্যমে বাঘ গণনার কাজ চলছে।