শিক্ষকের বাড়িতে পটকা ফুটিয়ে মল-গোবর নিক্ষেপ, তদন্ত কমিটি গঠন

0
15

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার খাড়াগোদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে পটকা ফোটানোকে কেন্দ্র করে সহকারী শিক্ষক হারুন অর রশিদের বাড়িতে মল-গোবর ও পটকা নিক্ষেপের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর আগে ভুক্তভোগী শিক্ষক অভিযুক্ত ৯ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। এরই পরিপেক্ষিতে মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) দুপুরে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য কামাল হোসেনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। যা আগামী ৫ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। কমিটির বাকি দুজন সদস্য হলেন অত্র বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবু তেলোয়ার ও আফজালুর রহমান। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল মতিন বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষক ৯ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিঠি গঠন করে দিয়েছি। আগামী পাঁচদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছি। ঘটনা প্রমাণিত হলে নীতিমালা অনুযায়ী অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনা হবে। এর আগে গত রোববার (২৪ মার্চ) বিদ্যালয় চলাকালিন শ্রেণিকক্ষের (ভোকেশনাল ট্রেড) মধ্যে কয়েকজন শিক্ষার্থী মিলে পটকা ফোটায়। বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল মতিন ওই সময় বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন। তাৎক্ষণিক বিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞানের সহকারী শিক্ষক হারুন আর রশিদসহ তিন সহকারী শিক্ষককে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের হাজির করার জন্য মৌখিক নির্দেশনা দেন। এরপর শিক্ষার্থীদের ব্যাগ তল্লাশি চালিয়ে প্রমাণ পাওয়ায় ৯ শিক্ষার্থীকে ম্যানিজিং কমিটির সভাপতির কাছে হাজির করেন। এরপর তারা সকলে নিজেদের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাইলে সভাপতি তাদের সাধারণ ক্ষমা করে দেন। ঘটনার দিন রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে অভিযুক্ত ৯ শিক্ষার্থী ভুক্তভোগী শিক্ষক হারুন আর রশিদের বাড়িতে কচুপাতায় করে নিয়ে আসা মানুষের মল ও গোবর নিক্ষেপ করে। অসংখ্য পটকা এক সঙ্গে ধরিয়ে বাড়ির মধ্যে ছুড়লে পরিবারসহ অতঙ্কিত হয়ে পড়েন তিনি। পরে ওই শিক্ষার্থীরা আবারও তাদের দোষ স্বীকার করে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাহারুল ইসলাম এই ৯ শিক্ষার্থীকে কিশোর গ্যাং উল্লেখ করে ঢাকা পোস্টকে বলেন, এই কিশোর গ্যাং বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল ট্রেড কক্ষে বিকট জোরে পটকা ফোটায়। এতে বিদ্যালয়ের মেয়ে শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। পরে নির্দেশনা অনুযায়ী হারুন আর রশিদসহ তিন শিক্ষক অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের সনাক্ত করে হাজির করে। তারা ভুল স্বীকার করলে ক্ষমা করে দেওয়া হয়। এরপরই রাতে শিক্ষক হারুনের বাড়িরে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটায় এই ৯ শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী শিক্ষক একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আজকে আমরা সভা করেছি। সেখানে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছেন ম্যানিজিং কমিটির সভাপতি। তিনি আরও বলেন, ঘটনার পরদিন অর্থাৎ সোমবার সকালে ৯ শিক্ষার্থীর মধ্যে পাঁচ শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে এলে সভাপতির মৌখিত নির্দেশনা অনুযায়ী তাদেরকে ক্লাস থেকে সাসপেন্ড করা হয়। পরবর্তী অনুমতি না দেওয়া পর্যন্ত অভিযুক্ত ৯ শিক্ষার্থীর শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।