সমুদ্র দর্শন: পাঠে ও ভ্রমণে

0
5

প্রতিদিনের ডেস্ক:
পৃথিবীতে কত উল্টাপাল্টা ঘটনাই তো ঘটে! আদার বেপারিও মাঝে মাঝে জাহাজের খোঁজ-খবর রাখে। আজ তেমনই একটি প্রসঙ্গ নিয়ে লিখতে বসেছি। বিষয়টি সমুদ্র দর্শন। কিন্তু সমুদ্রের কতটুকুই বা দেখা যায়! আর যতখানি দেখা যায়, তার কতটুকুই বা ধারণ করতে পারে বর্ণমালাভিত্তিক শব্দ! সমুদ্র অনেক বড়। অনেক গভীর। তল স্পর্শ করা যায় না। কূল-কিনারা পাওয়া যায় না। এমন জ্ঞান নিয়েই আমার বাল্যশিক্ষা শুরু হয়েছিল। সমুদ্রবর্তী এলাকার মানুষ ছিলাম না। আমাকে সমুদ্র দেখাতে নিয়ে যাবে—এমন কেউ তখন আমাদের পরিবারে ছিল না। আমাদের নবম-দশম শ্রেণিতে বাংলা বইয়ে পাঠ্য ছিল কাজী নজরুল ইসলামের ‘সিন্ধু’ নামের কবিতাটি। এটি ছিল নজরুলের ‘সিন্ধু হিন্দোল’ কবিতার তিন পর্বের এক পর্ব। আমাদের প্রধান শিক্ষক আল মোস্তান এ কবিতা পড়িয়ে এবং বুঝিয়ে সমুদ্র বিষয়ে মুগ্ধ করেছিলেন। আমার ভেতরে এক ধরনের উন্মাদনাও সৃষ্টি হয়েছিল। কারণ কবিতাটির ‘তিনভাগ গ্রাসিয়াছো একভাগ বাকী/ সুরা নাই পাত্র হাতে কাঁপিতেছে সাকী’—লাইন দুটি মন্ত্রমুগ্ধ করে তুলেছিল।আমি বাবার সূত্রে ছোট থেকেই পারস্য সাহিত্য সম্পর্কে কিছুটা অবহিত ছিলাম। জানতাম মদ বা শরাব কী এবং সাকীর কাজইবা কী। কবিতাটি আমি মুখস্থ করে ফেলি। তখন থেকেই সমুদ্র আমার মধ্যে তোলপাড় সৃষ্টি করা আগ্রহের বিষয় হয়ে যায়। অধিকন্তু আরব্য-উপন্যাসসহ বিভিন্ন রূপকথার বইয়ে সমুদ্র অভিযান বিষয়ক কাহিনি পড়ে সমুদ্র বিষয়ে কৌতূহল বেড়ে যেতে থাকে। কিন্তু পদ্মপাড়ের ছেলেকে সমুদ্র দেখাবে কে? একবার সুযোগ এসেছিল। ১৯৮০ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে রাজশাহী বোর্ডে মানবিক বিভাগে সপ্তম স্থান পেলে অপ্রত্যাশিতভাবে সমুদ্র দর্শনের সুযোগ আসে।তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে হিজবুল বাহার নামের জাহাজে গভীর সমুদ্র দর্শনের ব্যবস্থা করেন। আমি আমন্ত্রণপত্র পাই। কিন্তু পোস্ট-অফিসের কল্যাণে সেই আমন্ত্রণপত্র আমার গ্রামের বাড়িতে পৌঁছতে বিলম্ব হয়। যেদিন চিঠিটি পৌঁছে, ঠিক তার পরের দিন সমুদ্রভ্রমণ। সময় ছিল না সেটি ধরার। আমি অজপাড়া গ্রামের একটি ছেলে প্রেসিডেন্টের সাথে জাহাজে করে সমুদ্র দর্শনের বিরল সুযোগ থেকে বঞ্চিত হই। তবে সেই বঞ্চনা সবখানি লোকসানের কারণ হয়নি। সেই ঘটনা আমার একাধিক কবিতার মিথ ও অনুষঙ্গ হতে চেয়েছে। আমাকে দিয়ে একাধিক কবিতা লিখিয়ে নিয়েছে। ‘কুয়াশামাখা সমুদ্র’ শিরোনামের কবিতাটির কিয়দাংশ উপস্থাপন করা যেতে পারে—
‘আব্বা বলতেন, আদার বেপারী হয়ে
জাহাজের খবর নিতে যাওয়া
আর পানিতে টাকা ফেলা একই কথা!
জেনেছিলাম, জাহাজ চলে সমুদ্রে—
পাগলায় যেমন চলতো ভাদুচাচার গুজরঘাটের লা;
তখন আমি গাজী গাজী বলে নৌকা চালানো
মতলব মিয়ার মেঘনাও দেখিনি
অথচ আইএ সিক্স্থ স্ট্যান্ড করায়
একবার জাহাজে চড়ে সমুদ্র দেখার
আমন্ত্রণ জুটেছিল;
সেও আবার মহামান্য রাষ্ট্রপতির সাথে!
এ যেন লাফ দিয়ে এভারেস্টে ওঠার স্বপ্ন!’
কাজী নজরুল ইসলামের ‘সিন্ধু হিন্দোল’ কবিতাটি অনেকবার পড়েছি। যতবার পড়েছি; ততবারই নতুন করে ভালো লেগেছে। অকূল-অতল-অজেয়-অনিয়ন্ত্রণযোগ্য সমুদ্রের স্রােতের প্রাবাল্য, ঢেউয়ের উন্মত্ততা, জোয়ারের ভয়ঙ্কর সৌন্দর্য এবং তিনভাগ জল একভাগ স্থল—পৃথিবীর সাথে তার এই আনুপাতিক সম্পর্ক এবং বৃষ্টির উৎস ও সব নদীর চূড়ান্ত গন্তব্য—এতসব ডাইমেনশন নজরুলের ‘সিন্ধু হিন্দোল’ কবিতায় চমৎকারভাবে ফুঠে উঠেছে। সমুদ্র নিয়ে অন্যান্য বেশকিছু কবিরও কবিতা পড়েছি। কিন্তু ‘সিন্ধু হিন্দোল’র মতো সমুদ্র উপযোগী বিরাটত্ব ও ব্যঞ্জনা অন্য কোনো কবিতা ধারণ করতে পারেনি। সমুদ্র প্রাণের উৎস, প্রাণের শেষ ঠিকানাও। সমুদ্রই পৃথিবীকে সুজলা-সুফলা-শস্য শ্যামলা-চির উর্বরা করে রেখেছে। পৃথিবী তার কন্যা। আবার সেই পৃথিবী তার সাকী এবং প্রেয়সী। নজরুল পৃথিবী ও সমুদ্রের এই বহুমাত্রিক সম্পর্কটি ফুটিয়ে তুলেছেন অতুলনীয় সাফল্যে। অভাবনীয় চিত্রকল্প, অনুপম কল্পচিত্র, অসাধারণ উপমা, অভিনব উৎপ্রেক্ষা, বিচিত্র ও গভীর ছন্দ, ওজনদার শব্দের ব্যবহার, অনুপ্রাসের অনুরণন, ব্যঞ্জনার ঐশ্বর্য—সব মিলে ‘সিন্ধু হিন্দোল’ কবিতাটি আকৃতিতে ও ঐশ্বর্যে, গাম্ভীর্যে ও গভীরতায়, উচ্ছ্বাসে ও উন্মাদনায় হয়ে উঠেছে সমুদ্রের জীবন্ত শব্দপ্রতিমা। সমুদ্রের ভৌগোলিক রূপটি আমি বাস্তবে পরে দেখেছি। প্রথমে নজরুলের কবিতায় দেখি—যা অনুপম সুন্দর এবং ভয়ঙ্কর সুন্দর। স্থল ও সমুদ্রের অবস্থা দেখে মনে হয়, পৃথিবীর সরু কোমর জড়িয়ে আছে জলের মেখলা বা রূপোর বিছা। এই বিছা ধরিত্রীর নাচের সাথে সাথে নেচে ওঠে—বেজে ওঠে গভীর ঝংকারে।
‘হে সুন্দর জল-বাহু দিয়া
ধরণীর কটিতট আছ আঁকড়িয়া
ইন্দ্রনীলকান্তমণি মেখলার সম,
মেদিনীর নিতম্ব-দোলার সাথে দোল অনুপম!’
সমুদ্র সর্বাবস্থায় সুন্দর। তবে তার প্রকৃত সৌন্দর্য হচ্ছে ভয়ঙ্কর-সুন্দরতায়। নজরুল তাঁর ‘সিন্ধু হিন্দোল’ কবিতায় সমুদ্রের সেই ভয়ঙ্কর সৌন্দর্যকে ফুটিয়ে তুলেছেন যথোপযুক্ত শব্দের ব্যবহার করে। কবিতায় এসেছে তরঙ্গ-বিভঙ্গ, সর্বগ্রাসী, মৃত্যু-ক্ষুধা, হিন্দোলা, উদ্দাম লীলা, গর্জনে গর্জনে, বিদ্রোহী, হাঙ্গর-কুম্ভীর, উন্মাদ, ঊচ্ছ্বাস, ঊলসিয়া, প্লাবনের বিষাণ, জোয়ারের উচ্ছ্বাস, ব্যথার ক্রন্দন, ক্ষুধিত, তরঙ্গের আলিঙ্গন, ইন্দ্রনীলকান্তমণি মেখলা, অনন্তযৌবন, মত্ত, ব্যথা-উতরোল, সীমাহীন রিক্ত হাহাকার, ক্রন্দন-কল্লোল প্রভৃতি শব্দ ও শব্দচিত্র। কাজী নজরুল ইসলাম সমুদ্রকে দেখেছেন বহুকৌণিক দৃষ্টি থেকে। সূর্য সব প্রাণের উৎস হলে, সমুদ্র হচ্ছে সেই প্রাণ-সৃজনের গর্ভাশয়। সমুদ্রের পেট থেকেই এক এক করে বের হয়ে এসেছে প্রাণ। নজরুল অনেকটা বিগব্যাঙ থিওরির সমান্তরালে বিশ্ব-প্রাণ-সৃষ্টির একটি ছকি এঁকেছেন; যেখানে মহাকাশ নয়, সমুদ্র হচ্ছে সেই ছবির মূল কেন্দ্র।
‘জাগিল আনন্দ-ব্যথা জাগিল জোয়ার,
লাগিল তরঙ্গে দোলা, ভাঙিল দুয়ার,
মাতিয়া উঠিলে তুমি!
কাঁপিয়া উঠিল কেঁদে নিদ্রাতুরা ভূমি!
বাতাসে উঠল ব্যেপে তব হতাশ্বাস,
জাগিল অনন্ত শূন্যে নীলিমা-ঊছাস!’
কিন্তু সেখানেই শেষ নয়। অফুরন্ত সম্পদ ও অনিঃশেষ জলের উৎস সমুদ্রের বুকে তিনি বিরহের গভীর কান্নাও শুনেছেন। এবং সেই বিরহ, সেই কান্নার সাথে নিজের বিরহ ও কান্নার হৃদয়ছোঁয়া সাযুজ্য প্রতিষ্ঠা করেছেন। সমুদ্র বিরাট, বিরাট তার পিপাসা, বিরাট তার দান, ভয়ঙ্কর তার উন্মত্ততা। নজরুলও ছিলেন সমুদ্রের মতো দুরন্ত, অনিয়ন্ত্রণযোগ্য, দুঃসাহসী। নজরুলের হৃদয় ছিল সমুদ্রের মতো বিশাল। তিনি সমুদ্রের মতোই জোয়ার সৃষ্টি করেছিলেন বাংলা সাহিত্যে এবং সমাজে। তাঁর বিদ্রোহমূলক সৃষ্টিকর্মে এবং আন্দোলনে কেঁপে উঠেছিল তৎকালীন ব্রিটিশরাজ এবং সমাজের কায়েমী স্বার্থবাদীর গোষ্ঠীর আসন। নজরুল সমুদ্রের মতো অবারিতভাবে দিয়েছেন সমাজকে, মানবসমাজকে। বিনিময়ে সম্মান পেয়েছেন; আবার ব্যথাও পেয়েছেন প্রচুর। নজরুলের হৃদয় ছিল প্রেমে ভরা; সে প্রেম মানবজাতির জন্য এবং ব্যক্তিসীমায় নারীর জন্য। কিন্তু তার সেই প্রেমের পৃথিবী প্রতিষ্ঠিত হয়নি। সেটা তাঁর ব্যক্তিজীবনেও হয়নি, সমাজজীবনেও হয়নি। এই নিয়ে নজরুলের মনেবেদনা ছিল অপরিসীম ও অগাধ। নজরুল তাঁর নিজের বেদনাকে সমুদ্রের পিপাসার সাথে তুলনা করেছেন। তিনি এক গানে বলেছেন, ‘সবাই তৃষ্ণা মিটায় নদীর জলে/ কি তৃষা জাগে সে নদীর হিয়া-তলে/ বেদনার মহাসাগরের কাছে করো করো সন্ধান।’ সমুদ্রের মতো বিশাল হৃদয় নজরুল সমুদ্রকেই তাঁর বেদনার সহচর হিসেবে দেখেছেন। নজরুলের এই সমুদ্র দর্শন অভিনব, অনন্য ও অতুলনীয়।
‘এসো বন্ধু, মুখোমুখি বসি।
অথবা টানিয়া লহ তরঙ্গের আলিঙ্গন দিয়া; দুহু পশি
ঢেউ নাই যেথা-শুধু নিতল সুনীল
তিমিরে কহিয়া দাও-সে যেন খোলে না খিল
থাকে দ্বারে বসি।
সেইখানে কব কথা, যেন রবি শশী
নাহি পশে সেথা।
তুমি র’বে, আমি র’ব-আর র’বে ব্যথা।’
প্রসঙ্গত, নজরুল তাঁর অতি বিখ্যাত ও জনপ্রিয় ‘খেলিছে জলদেবী সুনীল সাগরজলে’ গানটিতে সমুদ্রের ঐশ্বর্যে সমৃদ্ধ এবং নৃত্যপটিয়সী দেবীরূপ উন্মোচন করেছেন দুর্দান্ত বাণী ও সুরে। সে গান শোনার সাথে নেচে ওঠে মন ও শরীর। সাগর যখন ঝঞ্ঝামুক্ত, ঝড় নেই, জোয়ারের তাণ্ডব নেই, তখন তার অনিঃশেষ জল নীল রং ধারণ করে। দেখে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। কিন্তু সাগর কোনো অবস্থাতেই স্থির থাকে না। সাগরের শান্ত অবস্থা রচনা করে মধুর নৃত্যসংগীতের দৃশ্য। পূর্ণিমায় জোয়ার জাগে সাগরে। কিন্তু যখন পূর্ণিমা নয়, কিন্ত চাঁদনী রাত, তখন সাগরে ধারণ করে নাচনেওয়ালী দেবীর দরবারী। সাগর তখন জলমঞ্চ, চাঁদ দর্শক আকাশপারে আর সেই জলদরবারে নাচে সৌন্দর্যের দেবী অঙ্গে নিয়ে মণিমুক্তা, ঝিনুকের মেখলা কোমরে। জলে ছলছল ঢেউয়ের নূপুর। জল নিজেই নাচনেওয়ালী দেবী যার গায়ে চাঁদের আলো পড়ে ঝলমল করে ওঠে সবখানি। তার ঝলমল সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয় চোখ। সমুদ্রের এমন রূপাঙ্কন অভিনব, অভূতপূর্ব ও অনন্যসুন্দর। গানটির বাণী পাঠ করা যায়:
‘খেলিছে জলদেবী সুনীল সাগর জলে।
তরঙ্গ-লহর তোলে লীলায়িত কুন্তলে।।
ছল-ছল ঊর্মি-নূপুর
স্রোত-নীরে বাজে সুমধুর
জল-চঞ্চল বাজে কাঁকন-কেয়ূর
ঝিনুকের মেখলা কটিতে দোলে।।’
অবার এই সমুদ্রের প্রেয়সী-প্রেমিকা রূপ এঁকেছেন নজরুল তাঁর আরেকটি বিখ্যাত “নাচে সুনীল দরিয়া আজি দিল্-দরিয়া পূর্ণিমা চাঁদেরে পেয়ে’’ গানে।
আমরা চিরদিন জেনে এসেছি-সমুদ্র চির-অগাধ ও চির-অশান্ত, চির-চঞ্চল। সমুদ্র মানেই জোয়ারের উতরোল। সমুদ্র মানেই ঢেউয়ের উন্মত্ততা। সমুদ্র মানেই প্রলয়-নৃত্য-আইলা, মহাসেন, ক্যাটরিনা, সিডর। সমুদ্র মানেই হাঙর-তিমির-কুমির শাসিত যুদ্ধজলভূমি। কিন্তু সমুদ্র মানেই কি শুধু অথই জলের আর জোয়োরের তাণ্ডবলীলা? সমুদ্র মানেই সারাটা সময় যৌবনের উদ্দামতা? সমুদ্র কি ক্লান্ত হয় না কখনো? সমুদ্র কি পাতা ঝরা গাছের মতো শীর্ণ-জীর্ণ হয় না কখনো? বর্ষার সমুদ্র আর শীতের মৌসুমের সমুদ্র সমানভাবে প্রমত্তা? জলের উৎস যে সমুদ্র-মহাসমুদ্র শীতের মৌসুমে কি সেখানেও ঝরে যাওয়ার মৌসুম শুরু হয়? শীত কি সমুদ্রকেও স্পর্শ করতে পারে তার ঠান্ডাহিমহাতে? সমুদ্র কি কাবু হয়ে পড়ে তখন? কাজী নজরুলের হাতে রচিত ‘শীতের সমুদ্র’ কবিতায় আমরা বিস্ময়ের সাথে সেরকম ছবি দেখতে পাই—
‘হে ঊদাসী বন্ধু মোর চির আত্মভোলা
আজ নাই বুকে তব বর্ষার হিন্দোলা!
শীতের কুহেলী-ঢাকা বিষণ্ন বয়ানে
কিসের করুণা মাখা! কূলের সিথানে
এলায়ে শিথিল দেহ আছো একা শুয়ে
বিশীর্ণ কপোল বালু-উপাধানে থুয়ে!’
সুতরাং দেখা যাচ্ছে—এক নজরুলের হাতেই সমুদ্রের ক্ষুধিত-তৃষিত-বিরহী মাতাল রূপ, ভয়ঙ্কর প্রলয়ী রূপ, শীতের গুটিসুটি বাঁধা সংকুচিত রূপ, নাচনেওয়ালী দেবীরূপ, প্রেমিকা রূপ এবং স্নেহময়ী জননীরূপ অঙ্কিত হয়েছে। নজরুলের মতো আর কেউই সমুদ্রকে এমন বহুকৌণিক দৃষ্টিকোণ থেকে অবলোকন করেননি এবং সমুদ্রের এমন বিচিত্র ও বহুবিধ রূপ আঁকতে পারেননি।