যশোরে মিলন ও হাসিবুর হত্যা দুই মামলায় আসামি ১৬ জন

0
28

নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর সদরের ঘুনি গ্রামের মিলন হোসেন ও রামকৃষ্ণপুর গ্রামের হাসিবুর রহমানকে হত্যার অভিযোগে ১৬ জনকে আসামি করে আদালতে আলাদা মামলা হয়েছে। রোববার নিহত মিলন হোসেন পিতা ইসলামপুর গ্রামের সেলিম বেপারি ও নিহত হাবিবুর রহমানের পিতা রামকৃষ্ণপুর গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস মোল্যা বাদী হয়ে এ মামলা করেছেন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়া উভয় অভিযোগের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে কিনা এ ব্যাপারে ৫ কার্যদিবসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়ার আদেশ দিয়েছেন কোতয়ালি থানার ওসিকে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী অসীম কুমার ঘোষ ও মাসুদুর রহমান। মিলন হোসেন হত্যা মামলার আসামিরা হলো, ঘুনি নাথপাড়ার মৃত বদু মিয়ার ছেলে নুর ইসলাম, মৃত নুর মোহাম্মদের ছেলে খোরশেদ আলম, একই গ্রমের শের আলী, মৃত সৈয়ার ছেলে মিজানুর রহমান, শের আলীর ছেলে সম্রাট, মৃত মনিরুজ্জামানের ও নিহত মিলন হোসেনের স্ত্রী আলেয়া খাতুন, সেলিম ব্যাপারির ছেলে হাসান আলী ও নরেন্দ্রপুর গ্রামের মেঘনা। হাসিবুর রহমান হত্যা মামলার আসামিরা হলো, সিতারামপুর গ্রামের পান্নু মিয়ার স্ত্রী জোহুরা বেগম, তার মেয়ে ও নিহতের স্ত্রী মনিকা খাতুন, আব্দুল হামিদের ছেলে আকিম উদ্দিন, মৃত রহমান গাজীর ছেলে কাশেম আলী ও মৃত রহমান গাজীর মেয়ে ছরিনা বেগম। নিহত মিলন হোসেন পিতা সেলিম বেপারির অভিযোগে জানা গেছে, মিলন হোসেন নিজ গ্রাম ছেড়ে ঘুনী মৌজায় তিন শতক জমি স্ত্রী আলেয়া খাতুনের নামে ক্রয় করে সেখানে বাড়ি-ঘর তৈরী করে বসবাস শুরু করেন। কিছুদিন যেতে না যেতে মিলনের স্ত্রী আলেয়া আসামিদের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে এবং সেচ্ছাধীন চলাফেরা শুরু করে। স্ত্রীর বেপরোয়া চলাফেরা মিলন মেনে নিতে পারেনি। এ নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায় ঝগড়া বিবাদ হতো। মিলন তার স্ত্রীর বেপরোয় জীবনযাপনের কারনে তার নামে কেনা জমি ফিরিয়ে দিতে বলেন। এরপর আলেয়া খাতুন আসামিদের সহযোগীতায় মিলনের পিতাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। সেলিম বেপারি ভিটেছাড়া হয়ে নানা জায়গায় নিাতিপাত করতে থাকেন। গত ২৭ এপ্রিল রাতে আসামিরা মিলন হোসেনকে ধরে নিয়ে মারপিট করে গুরুতর জখম করে রূপদিয়া ওয়েল ফেয়ার একাডেমির মধ্যে ফেলে চলে যায়। এ সংবাদ জানতে পেরে সেলিম বেপারি লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থলে যেয়ে ছেলেকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন রাতে মারা যায়। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিলে কতৃপক্ষ তা গ্রহণ না করায় তিনি আদালতে এ মামলা করেছেন। অপরদিকে, নিহত হাসিবুর রহমানের পিতা আব্দুল কুদ্দুস মোল্যার অভিযোগে জানা গেছে, চার বছর আগে হাসিবুর সিতারামপুর গ্রামের পান্নু মিয়ার মেয়ে মনিকা খাতুনকে বিয়ে করে। গত বছরের শেষ দিকে আসামি কাশেম আলী রঙের কাজের উদ্দেশ্যে হাসিবুরকে ঢাকায় নিয়ে যায়। এ সময় হাসিবুরের স্ত্রী ও শাশুড়িও ঢাকায় যায়। ঢাকায় যেয়ে হাসিবুরের স্ত্রী মনিকা খাতুন পর পুরুষে আশক্ত হয়ে পড়ে। হাসিবুর তার স্ত্রীর অনৈতিক সম্পর্ক দেখে ফেলে। এ নিয়ে হাসিবুর ও তার স্ত্রীর মধ্যে প্রায় ঝগড়া হতো। গত ঈদুল ফিতরে হাসিবুরসহ অন্যরা গ্রামের বাড়ি ফিরে আসে। হাসিবুর তার শ্বশুর বাড়ি বসবাস শুরু করে। গত ২৩ এপ্রিল রাতে আসামিরা হাসিবুরকে মারপিট করে হত্যার পর ঘরে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা করছে বলে প্রচার করে। হাসিবুরের গায়ে একাধিক আঘাতের দাগ ও শ্বাসরোধ করে হত্যার বিষয়টি জানতে পেরে তিনি আদালতে এ মামলা করেছেন।