১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ  । ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

খুলনায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আনাগোনা ও হত্যাকান্ডে উদ্বিগ্ন রাজনৈতিক নেতারা

খুলনা প্রতিনিধি
খুলনায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। সাধারণ মানুষও রয়েছেন আতঙ্কে। বিশেষ আগামী সংসদ নির্বাচনে যারা প্রার্থী হচ্ছেন তাদের উদ্বেগ সবচেয়ে বেশি। এখনই সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে বিশেষ অভিযান এবং ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রগুলো উদ্ধার না হলে নির্বাচনে এগুলো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা করছেন নেতারা। খুলনা মহানগর পুলিশের তথ্য বলছে, ‘অভ্যুত্থানের পর গত ১৬ মাসে খুলনায় ৪৮টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে সন্ত্রাসীদের অভ্যন্তরীণ বিরোধ, মাদক ও আধিপত্য বিস্তারের জেরে হত্যাকাণ্ড হয়েছে ২০টি। চলতি নভেম্বর মাসেই ৭ জনকে হত্যা করা হয়েছে। একের পর এক হত্যাকাণ্ডে, ভয় আর আতঙ্কের নগরীতে পরিণত হচ্ছে খুলনা। গত রবিবার দিনে-দুপুরে আদালত এলাকার মতো জনবহুল জায়গায় এমন হত্যাকা- মানুষকে আরও উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।’ খুলনা-২ আসনে বিএনপি’র প্রার্থী ও খুলনা মহানগর বিএনপি’র সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, “শুধু প্রার্থী বা রাজনৈতিক দলের নেতা, সাধারণ ভোটারও এসব নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন। তারা প্রতিনিয়ত আমাদেরকে তাদের উদ্বেগের কথা জানাচ্ছেন। আমরা আইন-শৃখলা বাহিনীর সঙ্গে কথা বলছি কিন্তু পরিস্থিতি উন্নতির কোনো দৃশ্য তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না।” তিনি আরও বলেন, “অল্প দিনের মধ্যেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে। তার আগেই আইন-শৃখলা নিয়ন্ত্রণে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা প্রয়োজন। তা’ না হলে মানুষ আস্থা পাবে না।” তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, “বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভাড়াটে খুনি ও অস্ত্রবাজদের কাজে লাগানোর তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে। আগামী নির্বাচন নিয়ে দেশি-বিদেশি অনেক ষড়যন্ত্র চলছে। ভোটের সময় এই সশস্ত্র গোষ্ঠীকে যে কেউ কাজে লাগাতে পারে। এজন্য খুব দ্রুত বিশেষ অভিযান পরিচালনা করতে হবে।” খুলনা মহানগর জামায়াতের আমির ও খুলনা-৩ আসনের প্রার্থী অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেন, “ভোটের কাজে গেলে মানুষ আইন-শৃখলা নিয়ে উদ্বেগের কথা তুলে ধরছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাজ করতে গেলে আমাদেরও নিরাপত্তা ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে। এই উদ্বেগ ও ভয় দূর করে আস্থা অর্জন করতে আইন-শৃখলা বাহিনীকেত দৃশ্যমান কিছু করে দেখাতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “ঘটনা ঘটার পরে দেখা যায় পুলিশের টহল ও তল্লাশি জোরদার করা হয়। ঘটনা ঘটনার আগেই ব্যবস্থা নিতে হবে। বিশেষ করে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো, পেশাদার সন্ত্রাসী ও অস্ত্রবাজদের গ্রেপ্তারে বিশেষ অভিযান এখন অতি জরুরি। সেই ব্যবস্থা নিতে হবে।” খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দার বলেন, “সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থীদের নিরাপত্তায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গত ২০ নভেম্বর থেকে রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি, বিশেষ করে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের কর্মসূচিতে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। প্রার্থীদের বাসভবন, কর্মসূচির স্থানে পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। তাদের দিকে সাদা পোশাকের পুলিশও নজর রাখছে।” তিনি আরও বলেন, “আইন-শৃখলা রক্ষায় পুলিশ তৎপর রয়েছে। বেশিরভাগ হত্যার কারণ উদ্ঘাটন করা হয়েছে। জড়িতদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। এই হত্যার সঙ্গে জড়িতরাও দ্রুত গ্রেপ্তার হবেন।”

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়