আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে নতুন সরকার যাত্রা শুরু করেছে। নতুন সরকারের ২৫ জন মন্ত্রী ও ১১ জন প্রতিমন্ত্রী গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শপথ নিয়েছেন। দপ্তরও বুঝে পেয়েছেন। পুরনো-নতুন মিলিয়ে মন্ত্রিসভার সামনে দেশের অর্থনীতি সামাল দেয়াকেই মূল চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে। টানা চতুর্থবারের মতো আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করল। এমন এক সময় যখন অর্থনৈতিক সংকট ঘনীভূত। মুদ্রাস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের নিম্নমুখী প্রবণতা, ঋণখেলাপিদের দৌরাত্ম্য, অর্থ পাচার- দেশের অর্থনীতিও একটা সংকটময় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে। ভোটে জয়ের পর নতুন মন্ত্রিসভায় মিলছে দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় বড় পরিবর্তনের আভাস। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করা এবং তার লক্ষ্য বাস্তবায়নে নতুন মন্ত্রিপরিষদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা যায়। নবগঠিত সরকারের সামনে বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। মোটাদাগে ছয়টি চ্যালেঞ্জের কথা বলা যায়। এর মধ্যে রয়েছে, দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে রাখা, অর্থনৈতিক চাপ সামলে গতি সচল রাখা, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখা, অর্থ পাচার ও প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি বন্ধ করা, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন, সরকারের ইমেজ বাড়ানো এবং সুশাসন নিশ্চিত করা। নতুন সরকারের সামনে তিনটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। একই সঙ্গে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে যে ১১টি বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়ে আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইশতেহার দিয়েছিল সেগুলো বাস্তবায়নের কথাও উঠে আসছে। পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে, ২০২২ সালে যেখানে মূল্যস্ফীতি ছিল ৭ দশমিক ৬ শতাংশ, ২০২৩ সালে সেটি বেড়ে দাঁড়ায় ৯ দশমিক ৭ শতাংশ। এই পরিসংখ্যান বলে দেয় সাধারণ মানুষ কতটা কষ্টে রয়েছে। নতুন সরকারকে শুরু থেকেই দ্রব্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে হবে। নিয়ন্ত্রণহীন বৈদেশিক মুদ্রার বাজারও। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে দুই বছর ধরে ডলারের বাজার পুরো নিয়ন্ত্রণহীন। আর এই ডলার সংকটের কারণে সরকার অনেক কিছুর দাম বৃদ্ধি করতে বাধ্য হয়। নতুন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই ডলার সংকট কেটে যাবে এমন পরিস্থিতি এখনো সৃষ্টি হয়নি। তাই সরকারকে ডলার সংকট মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। ডলার সংকটের ফলে রিজার্ভে টান পড়েছে। চাহিদা মেটাতে গিয়ে সরকার রিজার্ভ থেকে অনেক অর্থ ঋণ নিয়েছে। রিজার্ভ পূর্বাবস্থায় কবে নাগাদ ফিরবে, তার ওপর অনেকটাই নির্ভর করে অর্থনৈতিক সংকট উত্তরণের পথ। দুর্নীতি এখানে প্রধান বাধা। সার্বিক সুশাসন প্রতিষ্ঠিত না হলে দুর্নীতি দূর হবে না এবং দুর্নীতি দূর করা না গেলে আর্থিক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা দুরূহ হবে। কারণ এ খাতের বেহাল দশার পেছনে কিছু ব্যবসায়ী, ব্যবসায়ী-কাম-রাজনীতিক এবং আমলা ও ব্যাংক কর্মকর্তার যোগসাজশ কাজ করেছে। সরকার গত প্রায় দুই বছর দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং ব্যাংক খাতে ব্যাপক দুর্নীতি অনিয়মের নানা অভিযোগ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ আছে। দ্রব্যমূল্য সবার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে সরকার, যা ইতিবাচক। এর দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থাও দেখতে চাই। নতুন সরকার উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রার বিষয়ে সিরিয়াস থাকলে আর্থিক খাতে সুশাসনের কথা চিন্তা করতে হবে আগেই।
এগোতে হবে দূরদর্শী পরিকল্পনা নিয়ে
আরো দেখুন
অবশেষে শিল্পাঞ্চলে কালো মেঘ অপসারিত
বন্ধ থাকা কারখানাগুলোর অধিকাংশ খুলেছে। শিল্পাঞ্চলের সার্বিক পরিস্থিতিও অনেকটাই স্বাভাবিক বলে জানিয়েছে শিল্প পুলিশ। এরআগে শ্রমিক অসন্তোষের মুুখে সাভারের আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের ২১৯টি কারখানায় উৎপাদন...
শিগগিরই ছাত্রসংসদ নির্বাচন
ভাষা আন্দোলন, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, স্বাধীনতাযুদ্ধ, নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনসহ জাতির অনেক ক্রান্তিকালে এ দেশের ছাত্রসমাজ গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেছে। সেসব আন্দোলনে নেতৃত্ব দানকারী অনেকেই...