১৩ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ  । ২৬শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

৯ কোটি টাকার পানি শোধনাগার সচল ছিল তিন মাস

নড়াইল প্রতিনিধি
প্রায় পাঁচ বছর ধরে ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছিল নড়াইল পৌরসভার একমাত্র পানি শোধনাগার। তবে উদ্বোধনের পর মাত্র তিন মাস সচল ছিল শোধনাগারটি। সেটাও পাঁচ বছর আগের কথা। এরপর একাধিকবার চেষ্টা করেও নানা যান্ত্রিক সমস্যার কারণে এটি আর চালু করা সম্ভব হয়নি। ফলে বছরের পর বছর বিশুদ্ধ পানি পাচ্ছে না পৌরবাসী। এ নিয়ে তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ থাকলেও সহসা পরিত্রাণ নেই। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ২০১৪ সালে শহরের হাতিরবাগান এলাকায় পৌরসভার দুই লক্ষাধিক জনগণের বিশুদ্ধ পানির সংকট মেটাতে ৩৫০ ঘনমিটার পানি শোধন ক্ষমতাসম্পন্ন একটি পানি শোধনাগার নির্মাণের কাজ শুরু করে। প্রায় ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে পাঁচ বছর ধরে নির্মাণ কাজ চলে প্রকল্পটির। নির্মাণ শেষে ২০১৯ সালে পরিচালনার জন্য পৌরসভার কাছে হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু উদ্বোধনের মাত্র তিন মাস পরেই নানা যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয় শোধনাগারটিতে। কয়েকদিনের মধ্যেই তা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর দুই বছর আগে বর্তমান মেয়র আঞ্জুমান আরা দায়িত্ব নেওয়ার কিছুদিন পর পুনরায় মেরামত করে চালু করেন শোধনাগারটি। কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যে আবারও যান্ত্রিক ত্রুটিতে বন্ধ হয়ে যায় এটি। পরে আর চালু করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে কোনো ধরনের শোধন ছাড়ায় মোটর দিয়ে সরাসরি পানি উঠিয়ে পৌরবাসীর চাহিদা মেটাচ্ছে পৌর কর্তৃপক্ষ। শোধন ছাড়া এই পানি পান ও ব্যবহারের অনুপযোগী। ব্যক্তিগত টিউবওয়েল ও বোতলজাত পানি কিনে বিশুদ্ধ পানির চাহিদা মেটাচ্ছে পৌরবাসী। পৌরসভার বাসিন্দা আশরাফ উজ্জ্বল বলেন, সারা দেশে এতো উন্নয়ন হচ্ছে, অথচ আমাদের এখানে বিশুদ্ধ পানির সংকট। সাপ্লাই থেকে যে পানি আমরা পাই, তা পানযোগ্য না। একমাত্র শোধনাগারটি দীর্ঘ দিন ধরে নষ্ট হয়ে আছে। আমাদের দাবি, এটা ঠিক করুন, না হয় নতুন একটি নির্মাণ করুন। আলাদতপুরের বাসিন্দা বিল্লাল হোসেন বলেন, সাপ্লাই থেকে যে পানি আসে তাতে বিশ্রী গন্ধ বের হয়। গোসল করলে মাথার চুল পড়ে যায়। পানি শোধনাগারটি অকার্যকর হয়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। কবে সেটা ঠিক হবে তা জানা নেই। এ বিষয়ে নড়াইল জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী এমএম আবু সালেহ বলেন, নির্মাণ শেষে পানি শোধনাগারটি সম্পূর্ণ চালু অবস্থায় পৌরসভার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। এটাকে চালু রাখার জন্য নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করতে হয় এবং এর দায়িত্ব হচ্ছে পৌরসভার। এ বিষয়ে পৌরসভা ভালো বলতে পারবে। নড়াইল পৌরসভার মেয়র আঞ্জুমান আরা বলেন, এটা আমার আগের মেয়রের আমলে করা। তখন তিন মাস ভালো সার্ভিস দেওয়ার পর সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। আমি আসার পর চেষ্টা করি এটাকে চালু করার। কিন্তু চালু করার অল্প কয়েকদিন পর আবার বন্ধ হয়ে যায়৷ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার কারণে আসলে ওটা ঠিক করা ব্যয়বহুল, তাছাড়া ঠিক করলেও কতো দিন চলবে তার গ্যারান্টি নেই। আমারা নতুন করে পানি শোধনাগার করার চিন্তা ভাবনা করছি।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়