প্রতিবেদন নিয়ে বিতর্ক, তদন্ত করবে উচ্চতর কমিটি

0
11

প্রতিদিনের ডেস্ক:
রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি ও নীপিড়নের ঘটনায় দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। প্রতিবেদনের সুপারিশ অংশে অভিযুক্তকে বাঁচানোর চেষ্টা সুপারিশে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। অভিযুক্ত শিক্ষক হজ্জ করার পর আর কোনও ঘটনা ঘটেনি সে কারণে তাকে বরখাস্ত না করার সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। এমনকি যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ কমিটির বিরুদ্ধাচারণ করা হয়েছে সুপারিশে। তদন্ত প্রতিবেদনি নিয়ে বিতর্কের বিষয়ে জানতে চাইলে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তদন্ত কমিটির কেউ না। আমি তদন্ত কমিটি করে দিয়েছি ওরাই রিপোর্ট দিয়েছে। এখন সাধারণ শিক্ষক এর আগে কখনও তদন্ত করেনিনি। রিপোর্টের লাস্টের ফিনিশিংটা আমাকে দেখে দিতে বলেছিলো, আমি বলেছি, তোমাদের কাজ তোমরাই করো।’অভিযুক্ত শিক্ষককে বাঁচাতে সুপারিশ করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী বলেন, ‘ওটা তো ওদের দোষ আমার দোষ না। তদন্ত কমিটি রিপোর্ট দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমার অফিসে সংযুক্ত করেছি। অলরেডি ওই শিক্ষকে বরখাস্ত করেছি। নতুন করে উচ্চতর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়ে গেছে। কারা আছে তদন্ত কমিটিতে এখনই বলা যাচ্ছে না।’ মোহাম্মদ মুরাদ হোসেন সরকারমোহাম্মদ মুরাদ হোসেন সরকার ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আজিমপুর দিবা শাখায় সিনিয়র শিক্ষক মোহাম্মদ মুরাদ হোসেন সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানি ও নীপিড়নের অভিযোগ করা হয় গত ৭ ফেব্রুয়ারি। তিন জন ছাত্রীর অভিভাবক এবং আজিমপুর দিবা শাখার ‘যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ কমিটি’র সদস্যরা লিখিত অভিযোগ করেন অধ্যক্ষের কাছে। অভিযোগের পর শিক্ষক মমতাজ বেগমকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন— শিক্ষক ড. ফারহানা খানম ও শিক্ষক শামসুন আরা সুলতানা। তদন্ত কমিটি গত ২২ ফেব্রুয়রি অধ্যক্ষের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। এতে সাতটি সুপারিশ করা হয় সপুরিশগুলোর মধ্যে ৩ নম্বর সুপারিশে বলা হয়, যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ কমিটির সদস্যবৃন্দকেও জবাব দিহিতার আওতায় আনতে হবে, যাতে স্বেচ্ছাচারিতা না করতে পারে। তার জন্য উচ্চ পর্যায়ের মনিটরিং টিম গঠন করা যেতে পারে। প্রসঙ্গত, যৌন নীপিড়ন বিরোধী প্রতিরোধ কমিটি যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন অধ্যক্ষের কাছে।VK-1ভিকারুননিসায় যৌন হয়রানির প্রতিবাদ।
প্রতিবেদনের ৫ নম্বর সুপারিশে বলা হয়, কোনও শিক্ষক নিজে বা তার সন্তান দ্বারা বা কোনও বর্তমান অথবা প্রাক্তন ছাত্রী দ্বারা প্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট করলে (বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে বা অন্য কোনভাবে) এবং তা প্রমাণিত হলে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে, নতুবা শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হবে।প্রতিবেদনের ৬ নম্বর সুপারিশে বলা হয়, শাখা প্রধানগণের মনিটরিং আরও বাড়াতে হবে। প্রসঙ্গত, আজিমপুর শাখা সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ক্লাস থেকে বিরত রেখেছিলো। প্রতিবেদনের ৭ নম্বর সুপারিশে বলা হয়, জনাব মুরাদ হোসেনের বিরুদ্ধে ৩ জন ছাত্রীর আনা অভিযোগের ঘটনাগুলো এক বছর আগের হওয়ায় এবং তিনি পবিত্র হজ্জ করার পর এ ধরনের কোনও ঘটনা ঘটেনি বিধায় (ছাত্রীদের ভাষ্যমতে) তাঁকে বরখাস্ত না করে শেষবারের মত সতর্ক করে অন্য কোন শাখায় বদলি করা যেতে পারে। তাছাড়া অভিযোগকারীগণ উপযুক্ত কোনও তথ্যপ্রমাণ দিতে না পারায় তাঁর বিরুদ্ধে অন্য কোন সিদ্ধান্তে উপনিত হওয়া যাচ্ছে না। সেক্ষেত্রে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা যেতে পারে।উল্লেখ্য, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি যৌন হয়রানির বিষয় নিয়ে সামাজিক যেগিাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হলে শিক্ষক মোহাম্মদ মুরাদ হোসেন সরকারকে অধক্ষের কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়। পরে ২৬ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করলে ২৭ ফেব্রুয়ারি সাময়িক বরখাস্ত করে কলেজ কর্তৃপক্ষ।