হত্যার ৫ মাস পর জানা গেল ছেলের হাতে বাবা খুন

0
18

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর সকালের দিকে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার সংগ্রামপুর গ্রামের একটি ভুট্টার খেতের মধ্যে খেজের আলী মন্ডল (৬৫) নামে এক ব্যক্তির ক্ষতবিক্ষত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। স্থানীয়দের দেওয়া সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটস্থলে গিয়ে খেজের আলীর মরদেহ উদ্ধার করে এবং ময়না তদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এই ঘটনায় পরেরদিন নিহত খেজের আলীর ভাই নাজির আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি দৌলতপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার দুই মাসেও মামলার কোন অগ্রগতি না হওয়ায় গত ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে মামলাটির তদন্তভার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে দেওয়া হয়। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করতে গিয়ে হত্যাকাণ্ডের ৫ মাস পর রহস্য উন্মোচন করেতে সক্ষম হন পিবিআই কর্মকর্তারা । তদন্তের এক পর্যায়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিশ্চিত হন পারিবারিক বিরোধ এবং অভিমান থেকে পিতা খেজের আলীকে কোদাল দিয়ে কুপিয়ে এবং পিটিয়ে হত্যা করেন তার একমাত্র ছেলে আনোয়ার হোসেন(৪৬)। রোববার (৩১ মার্চ) বেলা ২টার দিকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর কুষ্টিয়া কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার শহীদ আবু সারোয়ার। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, মামলাটির তদন্ত ভার তাদের উপর আসার পর তারা সেটি খুবই গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করেন। হত্যাকান্ডের কারন অনুসন্ধান করতে গিয়ে সরোজমিন তদন্ত এবং প্রযুক্তির ব্যাবহারে পিবিআই এক পর্যায় নিশ্চিৎ হয় এই হত্যাকান্ডে খেজের আলীর ছেলে আনোয়ার হোসেন জড়িত। নিশ্চিৎ হওয়ার পর গত শনিবার সন্ধায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পিবিআই’র কুষ্টিয়া কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আনোয়ার তার পিতাকে হত্যা কথা স্বীকার করেন। এবং ঘটনাস্থলে গিয়ে তার দেখানো জায়গা থেকে হত্যাকান্ডে ব্যাবহৃত কোদালটি উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ সুপার শহীদ আবু সারোয়ার আরো জানান, আনোয়ার তার স্বীকারোক্তিতে বলেন, হত্যাকাণ্ডের কয়েকদিন আগে খেজের আলীর সামনে আনোয়ারকে তার ছেলে শিশির সামান্য বিষয়ে মারধর করে। এঘটনায় প্রতিবাদ না করায় পিতা খেজের উপর ক্ষোভের সৃষ্টি হয় আনোয়ারের। সেই রাগে-ক্ষোভে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আনোয়ার তার বাবা খেজের আলীকে গোপন কথা আছে বলে ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে গিয়ে পেছন থেকে কোদাল দিয়ে মাথায় কোপ দিয়ে এবং পিটিয়ে হত্যা করে। পরে রবিবার বিকেলে আনোয়ারকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরন করলে আদালতের কাছে আনোয়ার তার দোষ স্বীকার করেন। পরে আদালত আনোয়ারের জামিন আবেদন বাতিল করে তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।