এলো খুশির ঈদ

0
10

সৈকত হোসেন
‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ। তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে, শোন আসমানি তাগিদ।’ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই গান বাজছে রেডিও, টেলিভিশনসহ পাড়া মহল্লায়। শুরু হয়েছে ঈদের আনন্দ। দীর্ঘ একমাস সিয়াম সাধনার পর মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় আনন্দ উৎসবের দিন ঈদুল ফিতর। পুরো রমজান মাস সিয়াম সাধনার পর উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সারাদেশে ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হবে। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে চারদিকে ছড়িয়ে পড়বে আনন্দ, উচ্ছ্বাস আর ভালোবাসা। সাধ ও সাধ্যানুযায়ী ঘরে ঘরে রান্না হবে সুজি, সেমাই, পোলাও, কোরমা, পায়েস, পিঠাপুলিসহ নানা ধরনের সুস্বাদু খাবার। ঈদের নামাজ শেষে চলবে শুভেচ্ছা বিনিময়। তবে, ঈদ উদযাপন উপলক্ষে দেশের সব হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশু সদন, প্রবীণ নিবাস, ছোটমনি নিবাস, সামাজিক প্রতিবন্ধী কেন্দ্র, আশ্রয়কেন্দ্র, সেইফ হোমস, ভবঘুরে কল্যাণ কেন্দ্র, দুস্থ কল্যাণ ও মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে উন্নতমানের খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই খুশি ছড়িয়ে পড়েছে আমাদের সবার মাঝে। ঈদ এই দেশে শুধু ধর্মীয় উৎসবই না, সামাজিক উৎসবও। এই উৎসব সর্বজনীন। পবিত্র রমজান মাসের সিয়াম সাধনা শেষে বিশ্বজুড়ে মুসলিম উম্মাহর ঘরে ঘরে এলো খুশির ঈদ-উল-ফিতর। এবারও রাজধানীর হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। আবহাওয়া প্রতিকূল থাকলে ঈদের প্রধান জামাত সকাল ৯টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে অনুষ্ঠিত হবে বলে ইতোমধ্যে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে। প্রতি বছরের মতো এবারও পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যায়ক্রমে ৫টি ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া শত বছরের ঐতিহ্য ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ময়দানের ঈদ জামাতও এবার অনুষ্ঠিত হবে। ঈদ উদ্যাপন উপলক্ষ্যে দেশের সব হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশু সদন, বৃদ্ধ নিবাস, ছোটমনি নিবাস, সামাজিক প্রতিবন্ধী কেন্দ্র, আশ্রয় কেন্দ্র, সেইফ হোমস, ভবঘুরে কল্যাণ কেন্দ্র, দুঃস্থ কল্যাণ ও মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে উন্নতমানের খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশন যথাযথভাবে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদ্যাপন করবে। ঈদ উপলক্ষ্যে সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ঈদের ঠিক কয়েকদিন আগেই সরকারের মুক্তিযোদ্ধাদের এবং আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর হস্তান্তর নিশ্চিতভাবেই অনেকের ঈদের আনন্দ অনেক গুণে বৃদ্ধি করেছে। রাজনৈতিক দলগুলো এবং তাদের নেতাকর্মীদের মধ্যেও ফিরে এসেছে উৎসাহ-উদ্দীপনা। ঈদ ও রোজা কেন্দ্রিক কর্মসূচিও বেড়েছে, গণসংযোগও বেড়েছে। দেশের সবচেয়ে বড় এই ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে অনেক মানুষ ছুটে গেছেন পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে, এমনকি দেশের বাইরেও গেছেন বিপুল সংখ্যক মানুষ। সবকিছুতেই মহামারি জয়ের ছাপ। যদিও এরমধ্যেই চলছে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। যার প্রভাব চরমভাবে পড়েছে আমাদের জীবনযাত্রায়, দ্রব্যমূল্যে। এবার এই উৎসবকে কেন্দ্র করে নাড়ির টানে গ্রামে ফিরে গেছেন অনেকেই, প্রিয়জনদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগির জন্য। সড়ক, রেল, নৌ পথে যাতায়াতেও তেমন কোনো ভোগান্তি ছিল না। তবে এই ঈদযাত্রায় সবাইকে সাবধান হতে হবে, যাতে কালবৈশাখীর এই সময়ে কোনো নৌ দুর্ঘটনা না ঘটে। সড়কযাত্রা যেন নিরাপদ হয়। ঈদের আনন্দ শেষে সবাই যেন নিরাপদে ফিরতে পারি। শোক কাটিয়ে, হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে গিয়ে সবাই যেন এক হয়ে ঈদ উদযাপন করতে পারি। ঈদ মোবারক।