এটিএম বুথের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন

0
6

প্রশ্ন উঠেছে এটিএম বুথের নিরাপত্তাকর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে। কিছুদিন পরপর ঘটছে এটিএম বুথ ডাকাতি ও নিরাপত্তাকর্মীকে খুনের মতো ঘটনাগুলো। যা আতঙ্ক বাড়িয়ে দিয়েছে গ্রাহক ও নিরাপত্তাকর্মীদের মনে। রাতের বেলায় ডিউটি করতে যেমন জীবনের নিরাপত্তাহীনতার ভয় পাচ্ছে, তেমনি এটিএম বুথ সুরক্ষা নিয়েও তারা উদ্বিগ্ন। নিজের জীবনের নিরাপত্তায় অনেকেই চাকরি ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বাংলাদেশে টাকা তোলার যন্ত্র এটিএম মেশিনের নিরাপত্তার দায়িত্বে যারা থাকেন তাদের খুন হওয়ার ঘটনা নতুন নয়। গতকাল ভোরের কাগজে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ঈদের আগের দিন গত ১০ এপ্রিল ভোর ৫টা থেকে সাড়ে ৫টার মধ্যে গুলশান থানাধীন শাহজাদপুরে প্রগতি সরণির মাইশা চৌধুরী টাওয়ারে অবস্থিত মধুমতি ব্যাংকের এটিএম বুথে কর্মরত সিকিউরিটি গার্ড হাসান মাহমুদকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পরে তদন্তকালে তথ্যপ্রযুক্তি, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ, আসামির ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও পরিহিত পোশাক এবং গোয়েন্দা সূত্রে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে হত্যাকারী শনাক্তের পর মো. আরিফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। এটিএম বুথটি নিরিবিলি মনে হওয়ায় আরিফুল সেটি লুটের সিদ্ধান্ত নেয় এবং ঘটনাস্থলে প্রবেশের সময় এটিএম বুথের নিরাপত্তাকর্মী হাসান মাহমুদের বাধার মুখে পড়লে সে তাকে চাপাতি দিয়ে গলায় কুপিয়ে হত্যা করে। বস্তুত বড় ধরনের কোনো বাধার মুখোমুখি হলে এই নিরস্ত্র নিরাপত্তাকর্মীদের তেমন কিছু করার থাকে না। এছাড়া তাদের জন্য নেই কোনো বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এমতাবস্থায় নিরাপত্তাকর্মীদের নিরাপত্তা যখন প্রশ্নের মুখে তখন অনেক গ্রাহক জরুরি ভিত্তিতে বুথে গিয়ে টাকা তোলার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। এ সমস্যা সমাধানে কিছু পদক্ষেপ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নেয়ার রয়েছে। শক্তি-সামর্থ্য আছে এমন লোক নিয়োগ দিতে হবে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে, সঙ্গে দিতে হবে ভালো প্রশিক্ষণ আর অস্ত্র। বুথের নিরাপত্তা জন্য যেসব গার্ডকে পাঠানো হয় সেগুলো বিভিন্ন সিকিউরিটি সার্ভিস এজেন্সি থেকে ব্যাংকগুলো চুক্তির মাধ্যমে নিয়ে থাকে। যাদের ১৪ দিনের প্রশিক্ষণ, অগ্নিনির্বাপক প্রশিক্ষণ এবং কন্ট্রোল রুমের নম্বর দেয়া থাকে। কিন্তু এর বেশি তাদের নিরাপত্তার জন্য কোনো ব্যবস্থা থাকে না। এটা শুধু ব্যাংক, সিকিউরিটি কোম্পানি না, এটার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বসে সামগ্রিক একটা গাইডলাইন বের করতে হবে। এটা একেবারে হয়তো নির্মূল করা যাবে না, কিন্তু প্রতিরোধের কাজটা করতে হবে। জননিরাপত্তার পাশাপাশি বাড়তি গুরুত্ব দিতে হবে খোলা থাকা জরুরি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর দিকে। প্রয়োজনে বাড়তি নিরাপত্তাকর্মীর ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া জোরদার করতে হবে পুলিশ ও র‌্যাবের টহল।